ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ৪৭ সাল থেকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব পাশ কাটিয়ে দুটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা বঙ্গবন্ধু মেনে নেননি। বঙ্গবন্ধুর মতো একজন রাজনীতিক পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। তিনি সারা জীবন শোষিতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজনীতি করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সামগ্রিক জীবনটাই হচ্ছে বাংলাদেশের ইতিহাস। এরকম একজন মানুষকে তুলনা করার জন্য পৃথিবীতে আর একজন রাজনীতিককে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী গতকাল শনিবার রাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নেত্রকোণা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ওয়েবিনারে শতবর্ষে শত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, জাকিয়া পারভিন মনি, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক যতীন সরকার, ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান এবং শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রফিক উল্লাহ খান বক্তৃতা করেন। নেত্রকোণার ডিসি কাজী আবদুর রহমান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
মন্ত্রী মুজিব জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে একশত দিনের কর্মসূচি গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ নতুন প্রজন্মকে আদর্শ মানুষ হওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে।
তিনি বলেন, নেত্রকোণা ঐতিহ্যগতভাবেই বঙ্গবন্ধু প্রেমিকদের ঘাঁটি, সার্বিকভাবেই এই এলাকার মানুষ বঙ্গবন্ধুকে প্রাণের মতোই ভালোবাসেন। বঙ্গবন্ধু অনেকবার এ এলাকায় এসেছেন। ষাটের দশকের রাজপথের লড়াকু সৈনিক মোস্তাফা জব্বার বলেন, ৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত জনগণকে সংগঠিত করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বাধীনতার লড়াই করেছেন তিনি। এই ভূখণ্ডের গোটা জনগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী নেতৃত্ব অন্ধের মতো অনুসরণ করেছে। বঙ্গবন্ধু প্রতিটি ক্ষেত্রে অসীম দূরদর্শিতার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার লড়াইকে এগিয়ে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাঙালি ভাগ্যবান তারা একজন বঙ্গবন্ধুকে পেয়েছিল। আমরা ভাগ্যবান তার রক্তের উত্তরসূরি শেখ হাসিনাকে পেয়েছি। তার হাত ধরেই জাতির পিতার লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়িত হচ্ছে। মন্ত্রী দেশ বিভাগের পর ১৯৪৭ সালে বাংলা ভাষার দাবি, ৪৮ সালে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা এবং ৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু দূরদর্শিতার সাথে একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা নিয়ে প্রতি ইঞ্চি মেপে মেপে পা ফেলেছেন। সে কারণে আজকে বঙ্গবন্ধুকে যখন স্মরণ করি তখন ভাবতে হবে বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শ নিয়ে আলোচনা খুবই জরুরি।
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু নেত্রকোণা জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরে বলেন, এই অঞ্চল দেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল। তিনি শত কর্মসূচিতে নতুন প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই ধরনের আয়োজন চালু রাখতে পারলে নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস চর্চার কাছে নিযে যেতে পারবো।