বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নে রাশিয়া সহযোগিতা করবে। এরই অংশ হিসেবে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট – উৎক্ষেপণে রাশিয়া বাংলাদেশকে কারিগরি ও আর্থিক বিষয়ে সহযোগিতা করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২৩ সালের মধ্যে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ উৎক্ষেপণের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নেতৃত্বে কার্যক্রম শুরু করেছে। এই বিষয়ে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞসহ অংশিজনদের সাথে করণীয চুড়ান্ত করা হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এর সাথে আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে তাঁর দপ্তরে বাংলাদেশে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজেন্ডার আই ইগনাতভ (Alexander I Ignatov)এর নেতৃত্বে রাশিয়ার স্যাটেলাইট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গ্লাভকসমস এর পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে। সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত আগামীতে বাংলাদেশকে ডিজিটাল রূপান্তরের চলমান কর্মসূচি এগিয়ে নিতে টেলিযোগাযোগ খাতে বিনোয়েগের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
প্রতিনিধিদলের অপর সদস্যরা হলেন, গ্লাভকসমস এর সিনিয়র কর্মকর্তা ভিতালি সাফোনভ ( Vitali Safonov), সার্জে বারাইকিন (Sergey Barykin) আলেকজেন্ডার কাসনিন (Alexander kvashnin) কিরিল প্লতনিকভ ( Kirill Plotnikov)।
সাক্ষাৎকালে তারা বাংলাদেশের ডিজিটাল প্রযুক্তিসহ টেলিযোগাযোগ খাতের অগ্রগতি সংক্রান্ত বিষয়াদিসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে মত বিনিময় করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাশিয়াকে বাংলাদেশের পরীক্ষিত এক অকৃত্রিম বন্ধু উল্লেখ করে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে যে সহায়তা করেছে, তা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে। তিনি বাংলাদেশ এবং রাশিয়া বন্ধুপ্রতীম এই দুটি দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার ঐতিহাসিক সম্পর্কের উল্লেখ করে বলেন, স্বাধীনতার সময় থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়া যে সহায়তা করছে তা প্রশংসারযোগ্য। মন্ত্রী এই সময় রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে রাশিয়ার সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল বিপ্লবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতার সুফল দেশের মানুষ পেতে শুরু করেছে। তিনি বাংলাদেশে টেলিকম ও ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে রাশিয়ার সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন সরকারের ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং বিনিয়োগ বান্ধব নীতির ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ অত্যন্ত লাভ জনক। তিনি সরকারের বিনিয়োগ বান্ধব এই নীতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়. বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -২ এর কারিগরি ও আর্থিক সম্ভাব্যতা যাচাই থেকে শুরু করে নির্মাণ ও উৎক্ষেপণে রাশিয়া সহযোগিতা করবে। এমনকি তারা বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগের অন্যান্য খাত টেলিটকসহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস ব্যক্ত করেছে।
বৈঠকৈ রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত, টেলিকম প্রযুক্তিসহ উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন । বাংলাদেশের অগ্রগতিতে টেলিযোগাযোগ বা ডিজিটাল প্রযুক্তিখাত অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে এই খাতে রাশিয়ার বিনিয়োগে খুবই আগ্রহী বলে রাষ্ট্রদূত অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসি‘র চেয়ারম্যান মো: জহুরুল হক, বিসিসিএল এর চেয়ারম্যান, ড. শাহজাহান মাহমুদ, বিটিসিএল এর এমডি মো: আজিজুল ইসলাম, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: মহিবুর রহমানসহ পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।