হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিক ডিজিটাল ইনোভেশন কংগ্রেস ২০২২ এর দ্বিতীয় দিনে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ টু স্মার্ট বাংলাদেশ: ডেভেলপিং অ্যান ইনোভেটিভ নেশন’ শীর্ষক এই প্রবন্ধে তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১ উপস্থাপন করেন এবং আগামী ২০ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়নের সম্ভাবনা তুলে ধরেন।
মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি বলেন, “২০২১ সালের মধ্যে আমরা আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন সফলভাবে অর্জন করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য হলো ২০৪১ সালের মধ্যে উদ্ভাবনী ও জ্ঞানভিত্তিক উন্নত অর্থনীতিতে পরিণত একটি স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করা। স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১ অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২,৫৯৪ ডলার থেকে ১২,৫০০ ডলারে উন্নীত করা যা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বিশ্বের ২৩তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করবে।”
তিনি বলেন, “আগামী ২০ বছরে বাংলাদেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে আমূল পরিবর্তন আসবে। তার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও কাজ করার ভঙ্গিতেও পরিবর্তন আসবে। হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিক ডিজিটাল ইনোভেশন কংগ্রেস এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সকল সহযোগীরা একত্রিত হয়ে ৪র্থ শিল্প বিল্পবের এই যুগে কীভাবে আমরা উদ্ভাবনের জন্য একে অপরের সাহায্যে আসতে পারি সেই বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এবং সামনে এটি অর্জনের জন্য হুয়াওয়ের মতো গ্লোবাল আইসিটি পরিষেবা এবং সমাধান প্রদানকারীর প্রয়োজন হবে।”
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, “হুয়াওয়ের শীর্ষস্থানীয় ক্লাউড সলিউশনের সাহায্যে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) আমাদের জাতীয় ই-গভর্নমেন্ট ক্লাউড তৈরি করেছে। এবং আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য ইউনিফাইড ক্লাউড অবকাঠামোসহ ন্যাশনাল ডিজিটাল ফাউন্ডেশন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে।”
এখন পর্যন্ত বিসিসি ক্লাউড ৩০টির বেশি বিভাগ ও সংস্থাকে সেবা দিয়েছে, ৫০টিরও বেশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, বাংলাদেশের আইটি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ দ্বিগুণ কমিয়েছে, বাংলাদেশের আইটি ডেলিভারি দক্ষতা ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। এছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প যেমন অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য সমন্বিত বাজেট এবং অ্যাকাউন্ট সিস্টেম, ভ্যাকসিন সিস্টেম, বাংলাদেশের ই-গভর্নমেন্ট ইআরপি প্রকল্প, সরকারি মিটিং সিস্টেম বিসিসি ক্লাউড দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
ডিজিটাল উদ্ভাবন ও ডিজিটাল অর্থনীতির ভবিষ্যতের সম্ভবনায় হুয়াওয়ে ও আসিয়ান ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হুয়াওয়ে অ্যাপাক ডিজিটাল ইনোভেশন কংগ্রেসে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ১০টির বেশি দেশের ১৫শ’র বেশি সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ, গবেষক, সহযোগী ও বিশ্লেষকরা অংশগ্রহণ করেন। এ কংগ্রেসে আইসিটি ক্ষেত্রের বর্তমান সাফল্য ও অর্জন, বিভিন্ন শিল্পখাতে ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরাণ্বিত করা সহ সবুজ বিশ্ব ও লো-কার্বন সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
কংগ্রেসে আরও বক্তব্য প্রদান করেন হুয়াওয়ে অ্যাপাক এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মা, ন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন এজেন্সি ইন্দোনেশিয়ার রিসার্চ অর্গানাইজেশন ফর ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইনফরমেটিকসের চেয়ারম্যান ড. প্রকৌশলী বুদি প্রাওয়ারা, সারাওয়াক স্টেট গভর্নমেন্ট মালয়েশিয়ার ডিজিটাল ইকোনোমির চিফ সায়েন্টিস্ট ও চিফ অ্যাডভাইজর অধ্যাপক জগদূত (জ্যাক) সিং এবং হুয়াওয়ে অ্যাপাক এন্টারপ্রাইজের বিজনেস গ্রুপের সিটিও ব্র্যান্ডন উ সহ অনেক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ।
এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্যগুলো ছিলো আসিয়ান ও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ব্যবসায়িক ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সম্মিলন ঘটানো, সম্ভাব্য গ্রাহক ও সহযোগীদের নিয়ে ব্যবসার নতুন সুযোগ সন্ধান, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও শীর্ষস্থানীয় ডেভেলপারদের মধ্যে ধারণার বিনিয়ময় এবং শিল্পখাতে ব্যবহারের জন্য নতুন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) উদ্ভাবন খুঁজে বের করা।