ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদনে বিশ্বের সেরা ব্র্যান্ড হতে রোড ম্যাপ তৈরি করেছে ওয়ালটন। এই লক্ষ্য অর্জনে তৈরি হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি কর্ম-পরিকল্পনা। যেগুলো ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশী ব্র্যান্ড ওয়ালটন। প্রথমধাপে ওয়ালটন আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন। পরবর্তী ধাপে আগামী বছর বিশ্বের সবচেয়ে দামী বা গ্লোবাল মডেলের ফ্রিজ তৈরি করতে যাচ্ছে তারা। সেইসঙ্গে অংশ নিচ্ছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সব প্রতিযোগিতা এবং শীর্ষ বাণিজ্য মেলাগুলোতে।
রোড ম্যাপ বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সম্মেলন কক্ষে ডিসেম্বরের ২২ ও ২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন। সেখানে অংশ নিয়েছেন বিদেশী খ্যাতনামা প্রযুক্তিবিদগণ। তাদের সঙ্গে ছিলেন ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর আরএনডি বা গবেষণা ও উন্নয়ন, কোয়ালিটি কন্ট্রোল (কিউসি), প্রোডাকশন, সোর্সিং ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল আরএনডি, মোল্ড ও ডাই প্রোডাকশন, ইনজেকশন মোল্ডিং, প্রসেস ডেভলপমেন্ট, আন্তর্জাতিক ব্যবসা ইউনিটসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রকৌশলী ও প্রতিনিধিরা।
সম্মেলনের সমন্বয়ক ওয়ালটনের ফার্স্ট সিনিয়র অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর আব্দুর রউফ জানান, দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ও ডিজাইনাররা ফ্রিজে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব লেটেস্ট প্রযুক্তির সংযোজন; মানোয়ন্নয়ন; সৃজনশীল ডিজাইন, প্রতিযোগি মূল্য সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা বিশ্বের সবচেয়ে দামী তথা গ্লোবাল মডেলের ফ্রিজ তৈরির ক্ষেত্রে সময়োপযোগি ও বাস্তবসম্মত দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।
সূত্রমতে, গ্লোবাল মডেলের ফ্রিজ তৈরি করে আগামী বছর বিশ্বখ্যাত ‘রঋ উবংরমহ অধিৎফ’ ও ‘জবফ উড়ঃ উবংরমহ অধিৎফ ’ পুরস্কার অর্জন করার টাগেট রয়েছে ওয়ালটনের।
ওয়ালটন আন্তর্জাতিক বিজনেস ইউনিটের প্রধান এডওয়ার্ড কিম বলেন, নিঃসন্দেহে ওয়ালটন বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স বাজারে শীর্ষ ব্র্যান্ড। এখন সময় হয়েছে- গ্লোবাল মডেলের পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির মাধ্যমে বিশ্ব বাজারে শক্তিশালী অবস্থান তৈরির। দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব বাজারের সেরা ব্র্যান্ড হওয়ার এই যাত্রা শুরু করলো ওয়ালটন।
কিম আরো বলেন, বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে টেকসই সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের দীর্ঘমেয়াদি উপস্থিতি নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছি। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক অংশীদারদের সর্বোচ্চ গুণগতমানের পণ্য সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়ার পাশাপাশি ওইএম (অরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানফ্যাকচারার) এর মাধ্যমে বিজনেস ভলিউম বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছি। এ ধরনের নতুন ও উদ্ভাবনী ধারণাই ওয়ালটনকে ধাপে ধাপে বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
ওয়ালটনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম জানান, দেশের গন্ডী পেরিয়ে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ ’ খ্যাত ওয়ালটন পণ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এবার ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত বিশ্বের বাজারে ওয়ালটন পণ্য রপ্তানির বৃহৎ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিজনেস কনফারেন্স ও পণ্য প্রদর্শীতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে ওয়ালটন। চীনের ক্যান্টন ফেয়ার, নাইজেরিয়ার লাগোস ফেয়ার, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইলেকট্রনিক্স ফেয়ারসহ অতি সম্প্রতি জার্মানির চিলভেন্টা প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে তারা বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স এবং হোম অ্যাপ্লায়ান্সে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মেলা বার্লিনের ‘আইএফএ ফেয়ার ’ও যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের ‘সিইএস ফেয়ার’ এ অংশ নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ওয়ালটনের।