মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠা পল অ্যালেন ক্যান্স্যারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সোমবার ৬৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে তার পরিবার, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স, বিবিসির।
নন-হজকিন্স লিম্ফোমা নামের ক্যান্সারের জটিলতায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে। সোমবার বিকেলে দেওয়া ওই বিবৃতিতে অ্যালেনের বোন জোডি তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
খবরে বলা হয়, ২০০৯ সালে একবার এ রোগের চিকিৎসা নিয়েছিলেন অ্যালেন। এর পর মৃত্যুর মাত্র দুই সপ্তাহ আগে তিনি রোগটির আবার ফিরে আসার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি ও তার চিকিৎসক রোগটির চিকিৎসার ব্যাপারে ‘আশাবাদী’ বলে তখন বলেছিলেন তিনি।
তার মৃত্যুতে মাইক্রোসফটের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বলেছেন, “আমার অন্যতম পুরনো ও প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুতে ভীষণ আঘাত পেয়েছি আমি, সে না থাকলে পার্সোনাল কম্পিউটিং সম্ভব হতো না।”
অ্যালেন ও তার স্কুল জীবনের বন্ধু গেটস হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা ছেড়ে ১৯৭৫ সালে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট গড়ে তুলেন। এই মাইক্রোসফটই পরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফটওয়্যার কোম্পানি হয়ে দাঁড়ায়।
“প্রথম জীবনে লেকসাইড স্কুলে একসঙ্গে কাটানো সময়গুলোতে, মাইক্রোসফট গড়ে তোলাকালে আমাদের অংশীদারিত্বের সময় আর বছরের পর বছর ধরে আমাদের যৌথ কিছু মানবকল্যাণ প্রকল্প চলাকালীন সময়গুলোতে পল সত্যিকারের একজন অংশীদার ও প্রিয় বন্ধু ছিল,” বলেছেন গেটস।
“আরও সময় তার পাওনা ছিল, তারপরও প্রযুক্তির বিশ্বে ও মানবকল্যাণে তার অবদান প্রজন্মান্তর ধরে বেঁচে থাকবে। আমি ভীষণভাবে তার অভাববোধ করবো,” বলেছেন তিনি।
মাইক্রোসফট বিশাল একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার আগেই গেটসের সঙ্গে বিতর্কের জেরে ১৯৮৩ সালে কোম্পানিটি ছেড়ে ছিলেন অ্যালেন, কিন্তু মূল অংশীদারিত্বে তার যে শেয়ার ছিল তাতেই তিনি বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হন।এতে জীবনের বাকি সময় প্রমোদতরী, চিত্রশিল্প, রক মিউজিক, স্পোর্টস টিম, ব্রেইন রিসার্চ ও রিয়েল স্টেট ব্যবসায় কোটি কোটি ডলার ব্যয় করার সুযোগ পান তিনি।
অ্যালেন ১৯৮৬ সালে গণমাধ্যম ও কমিউনিকেশন বিনিয়োগ ফার্ম ভলকান প্রতিষ্ঠা করেন। এই ব্যবসায়ও সফল হয়েছিলেন তিনি। সারা জীবন ধরে বিজ্ঞান, শিক্ষা ও বন্যাপ্রাণী সংরক্ষণের মতো জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন প্রকল্পে তিনি দুই বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ দান করেছেন বলে জানা গেছে।