উত্তরাধিকার আইনের অধীনে মৃত কন্যার ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট পরিচালনায় মা-বাবার অধিকার রয়েছে বলে রায় দিয়েছে জার্মানি’র সর্বোচ্চ আদালত।দেশটির ফেডারেল কোর্ট অফ জাস্টিস (বিজিএইচ)-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, অনলাইন ডেটা নিয়েও ব্যক্তিগত ডায়েরি বা চিঠির মতো আচরণ করা উচিৎ। আর তা হচ্ছে উত্তরাধিকারদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া।
২০১২ সালে একটি ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে মারা যান ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী। মেয়ের মৃত্যু আত্মহত্যা ছিল না কিনা বুঝতে তার ফেইসবুক অ্যাকাউন্টের অধিকার চান মা-বাবা। কিন্তু মেয়ের কনটাক্ট ও অন্যান্য বিষয়ে প্রাইভেসি উদ্বেগ দেখিয়ে অ্যাকাউন্টে বাবা-মায়ের প্রবেশাধিকার দিতে রাজি হয়নি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যমটি, খবর বিবিসি’র।
নিজেদের বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী কোনো ব্যবহারকারী মারা গেলে ফেইসবুক তার অ্যাকাউন্টে শুধু আত্মীয়দেরকে আংশিক প্রবেশাধিকার দেয়। এই অধিকারে শুধু নিহতের অ্যাকাউন্টটি অনলাইন রেখে ‘মেমোরিয়াল’ করে দেওয়া বা তা পুরোপুরি মুছে ফেলার সুযোগ রয়েছে।
২০১৫ সালে জার্মানির এক নিম্ন আদালত ওই মা-বাবার পক্ষেই রায় দেয়। ফেইসবুকের ডেটা ব্যক্তিগত পত্রের মতো একইভাবে উত্তরাধিকার আইনের আওতায় পড়বে। কিন্তু ২০১৭ সালে এক আপিল আদালত ফেইসবুকের পক্ষে রায় দিয়ে অবস্থা পাল্টে দেয়। এক্ষেত্রে ওই কিশোরীর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ফেইসবুক ও তার মধ্যে থাকা সব ধরনের চুক্তি বাতিল হয়ে গিয়েছে আর এই অ্যাকাউন্ট তার মা-বাবার কাছে দেওয়া যাবে না বলে জানায় আদালত।
পরবর্তীতে নিহতের মা-বাবা বিজিএইচ-এর দ্বারস্থ হলে এই অ্যাকাউন্টের অধিকার পেয়ে যান। বিচারক উলরিশ গারমান বলেন, মৃতের পর আইনি উত্তরাধিকারদের কাছে ব্যক্তিগত ডায়েরি আর পত্র হস্তান্তর করা প্রচলিত। আর ডিজিটাল ডেটাকে আলাদাভাবে দেখার কোনো কারণ নেই। সেইসঙ্গে নিজেদের শিশু সন্তান অনলাইনে কাদের সঙ্গে কথা বলেছে তা নিয়ে মা-বাবা জানার অধিকার রাখেন বলেও উল্লেখ করে আদালত।
তথ্যসূত্র: