যে কোনো মোবাইলে কলরেট ৪০ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এজন্য খসড়া তৈরি করে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। খসড়া কলরেটে ৪০ পয়সা অভিন্ন রেট প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় এ কলরেট চূড়ান্ত করে পাঠালে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় তা প্রকাশ করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এই সেবা আগস্টের ১ তারিখে চালু হতে পারে।
অপরদিকে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের ভালো নেটওয়ার্ক ও কম খরচে উন্নত সেবা দিতে আসছে নম্বর না বদলিয়ে অপারেটর পরিবর্তন সেবা বা এমএনপি। কিন্তু এতে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অননেট ও অফনেট কলরেট।
প্রসঙ্গত, দেশে দুই ধরনের কলরেট চালু আছে, অননেট ও অফনেট। অননেট (একই মোবাইল নেটওয়ার্ক) ও অফনেট (এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে) তুলে দিয়ে সরকার মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর জন্য ‘একটিই কলরেট’ চালু করতে যাচ্ছে। এমএনপি (মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি) সেবা চালুর আগেই এক কলরেট চালু হতে পারে, যার সুফল পাবেন মোবাইলফোন ব্যবহারকারীরা। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের ভালো নেটওয়ার্ক ও কম খরচে উন্নত সেবা দিতে আসছে নম্বর না বদলিয়ে অপারেটর পরিবর্তন সেবা বা এমএনপি। কিন্তু এতে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অননেট ও অফনেট কলরেট।
অন্যদিকে এমএনপির টেস্টিং শুরু করেছে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক। রাষ্ট্রায়ত্ব মোবাইলফোন অপারেটর টেলিটক এমএনপি নেটওয়ার্কে এখনও যুক্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি ল্যান্ডফোন বিটিসিএল (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড) ও পিএসটিএন (প্রাইভেট সুইচ টেলিফোন নেটওয়ার্ক) অপারেটর কীভাবে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে। তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর আশা, বিটিসিএল এমএনপি নেটওয়ার্কে আসতে অসহযোগিতা করবে না।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘৪০ পয়সা কলরেটের প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে আছে। ওখান থেকে এলে আমি দেখবো কী করা যায়।’ এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘টেলিটকের এই প্রক্রিয়ার বাইরে থাকার কোনও কারণ দেখি না। চলে আসবে। আর বিটিসিএল-এর সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। তারা এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে অসহযোগিতার কথা বলেনি।’
মঙ্গলবার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) এমএনপির কারিগরি বিষয় নিয়ে নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে এমএনপির কারিগরি উন্নয়ন কোন অবস্থায় আছে, কারিগরি জটিলতাগুলো কী ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে এমএনপি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর অন্তত ৬০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন বলে বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ওই সূত্র জানায়, তিনটি মোবাইল ফোন অপারেটর এখনই এমএনপি সেবা চালুর জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মোবাইল অপারেটরের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিন্ন কলরেট চালু না করে এমএনপি চালু করলে সুবিধার পরিবর্তে জটিলতা তৈরি করবে।’ আইজিডব্লিউ, আইসিএক্স, পিএসটিএন অপারেটরগুলোর সঙ্গে এমএনপি নিয়ে যে জটিলতা রয়েছে তা সমাধান না করে এই নেটওয়ার্কে যুক্ত করা হলে গ্রাহকসেবা বিঘ্নের আশঙ্কা করেন তিনি।
বর্তমানে বিটিআরসির নির্ধারণ করে দেওয়া সর্বনিম্ন অননেট চার্জ প্রতি মিনিট ২৫ পয়সা, অফনেট ৬০ পয়সা। সর্বোচ্চ চার্জ প্রতি মিনিট দুই টাকা। মোবাইল ফোন অপারেটররা এই সীমার মধ্যে থেকে নিজেদের অপারেটরের চার্জ নির্ধারণ করেছে। ফলে একেক অপারেটরের চার্জ একেকরকম। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন অপারেটরে অননেটে ৩০ থেকে ৩৯ পয়সা এবং অফনেটে ৯১ পয়সা থেকে এক টাকা ৪০ পয়সায় কল করার সুযোগ পাচ্ছেন বর্তমানে। এক রেট চালু হলে এই পার্থক্য এবং বৈষম্য থাকবে না।