বাংলাদেশের রাইডশেয়ারিং খাতে নিরাপত্তার মান বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আজ একটি যৌথ ক্যাম্পেইন পরিচালনার ঘোষণা করেছে পাঠাও এবং উবার। এর পাশাপাশি গ্রাহকদের উন্নত অভিজ্ঞতা প্রদান করাও এই ক্যাম্পেইনের একটি লক্ষ্য।
এই ধরনের সম্মিলিত উদ্যোগ রাইডশেয়ারিং খাতে প্রথম বারের মতো গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে উবার ও পাঠাও একত্রে উভয় প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন রাইডশেয়ার সুরক্ষা পদ্ধতি ও অন্যান্য ব্যবস্থা নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করবে। এর মধ্যে রয়েছে চালক ও গাড়ির যাচাইকৃত তথ্যসহ ট্র্যাকযোগ্য ও ইন্স্যুরেন্সকৃত রাইড এবং বাধ্যতামূলক কাগজপত্র যাচাইয়ের সুনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা। রাইডশেয়ারিং ট্রিপকে যাতায়াতের একটি নিরাপদ মাধ্যম করে তোলার জন্য উভয় কোম্পানির কাছে বিষয়গুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কর্তৃপক্ষ দ্বারা অনুমোদিত ও নিয়ন্ত্রিত রাইডশেয়ারিং অপশনগুলি তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক ও নিরাপদ। এগুলির ফলে চালক ও যাত্রী উভয়ের জন্যই নানা রকমের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
ক্যাম্পেইনের প্রথম পর্যায়ে উবার ও পাঠাও-এর সব ড্রাইভারের জন্য একটি একই ট্রেনিং মডিউল চালু করা হবে। এর লক্ষ্য হলো ড্রাইভারদেরকে নিজেদের নিরাপত্তার পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশিক্ষিত করে তোলা। মোটরযান চলাচল বিষয়ে সাধারণ নির্দেশনা, ট্র্যাফিক সংকেত ও ব্যবহারবিধি, ট্র্যাফিক ও সড়ক নিরাপত্তার নিয়ম ভঙ্গ করার প্রভাবসহ অন্যন্য প্রাসঙ্গিক বিষয় এই ট্রেনিং মডিউলের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
পাঠাও-এর সিইও ফাহিম আহমেদ বলেন, “আমাদের যাত্রী ও চালকদের নিরাপত্তা আমাদের কাছে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সাথে সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন উদ্যোগও আমরা গ্রহণ করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, উবারের সাথে এই যৌথ উদ্যোগ আমাদের নিরাপত্তার উন্নত মান নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে এবং সবার জন্য নিরাপদ রাইডও নিশ্চিত করবে।”
উবার বাংলাদেশ ও পূর্ব ভারত প্রধান আরমানুর রহমান বলেন, “ইউজারদেরকে নিরাপত্তা ও উন্নত অভিজ্ঞতা পেতে সাহায্য করা আমাদের কাছে সবসময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাইডশেয়ারিংয়ের নিরাপদ ও সুবিধাজনক রাইডের কারণে আমরা শুরু থেকেই মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে পেরেছি। আজ পাঠাও-এর সাথে সম্মিলিতভাবে সেই মানকে আরও উন্নত করে তোলার সুযোগ পেয়ে আমরা আনন্দিত। কোম্পানি হিসেবে একটি সাহসী ও স্বচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে আমরা নিজেদের প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা উন্নত করতে কাজ করেছি। এর পাশাপাশি এই খাতের জন্য নতুন মানও স্থাপন করেছি। এছাড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং নীতি সংক্রান্ত প্রধান অংশীদারদের সাথে সম্মিলিতভাবেও আমরা এগোচ্ছি। বাংলাদেশের জনগণ, আমাদের যাত্রী ও চালকদের জন্য রাইডশেয়ারিংকে নিরাপদ করার জন্য তাদের যে লক্ষ্য, তার সাথে আমরাও একমত।”
যাত্রার শুরু থেকে সব অংশীদার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে রাইডশেয়ারিং খাত। এর লক্ষ্য হলো একটি বাটন ট্যাপ করার মাধ্যমে সুবিধাজনক ও নিরাপদ যাতায়াতের সুযোগ প্রদান করে যাতায়াত ব্যবস্থার চিত্র পাল্টে দেওয়া। বাংলাদেশে রাইডশেয়ারিং একটি জনপ্রিয় পরিবহন মাধ্যম হয়ে ওঠার পেছনে প্রধান কারণ হলো এর সেফটি ফিচারগুলির সুবিধা। উবার ও পাঠাও-এর একটি দীর্ঘমেয়াদী যৌথ উদ্যোগের পথ চলা শুরু হলো। উভয় প্ল্যাটফর্মে যাত্রী ও চালকদের উন্নত অভিজ্ঞতা প্রদান করতে ক্রমাগত নিজেদের মান বাড়িয়ে তোলা এই উদ্যোগের লক্ষ্য।
পাঠাও
২০১৫ সালে স্থাপিত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে নতুন সুযোগ সৃষ্টি, সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন এবং ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে জীবনের মান উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে পাঠাও। পাঠাও বাংলাদেশের বৃহত্তম ডিজিটাল সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম। বাংলাদেশে রাইড-শেয়ারিং, ফুড ডেলিভারি ও ই-কমার্স লজিস্টিকস সার্ভিসের ক্ষেত্রে এটি একটি অগ্রণী প্রতিষ্ঠান। পাঠাও-এর নেটওয়ার্কে যুক্ত আছেন ৮০ লক্ষের বেশি গ্রাহক, ৩ লক্ষ চালক-ডেলিভারি এজেন্ট, ৪০,০০০ ব্যবসায়ী এবং ১০,০০০ রেস্টুরেন্ট। এই বিশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্বৃদ্ধ বাংলাদেশের যাত্রায় অভিনব ভূমিকা রাখছে কোম্পানিটি।
উবার
গতিময়তার মাধ্যমে সুযোগ সৃষ্টি করাই উবারের লক্ষ্য। কীভাবে একটি বাটন স্পর্শ করেই আপনি একটি রাইড পেতে পারেন?—এই সহজ সমস্যাটি সমাধানের জন্য আমরা ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করেছিলাম। ১৫০ কোটিরও বেশি সংখ্যক রাইডের পরে, জনগণকে গন্তব্যের কাছাকাছি পৌঁছাতে আমরা নতুন পণ্য তৈরি করে যাচ্ছি। মানুষ, খাবার ও অন্যন্য জিনিস শহরের মধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার প্রক্রিয়াটি উবার পাল্টে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মটি পৃথিবীতে নতুন নতুন সম্ভাবনার রাস্তা খুলে দিচ্ছে।