শর্টকোড হলো ফোনের সংক্ষিপ্ত নম্বর। ৭ থেকে ১১ বা আরও বেশি ডিজিটের কোনও নম্বরে ফোন না করে সংক্ষিপ্ত একটি ফোন নম্বরে কল করে কাজ সম্পন্ন করা এখন সময়ের চাহিদা হয়ে উঠেছে। তবে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এই নম্বর মিলবে না। প্রাতিষ্ঠানিক, দাফতরিক, ব্যবসায়িক ও মোবাইলফোন বা সংশ্লিষ্ট অপারেটররা তাদের সেবাদানের সুবিধার্থে এই শর্টকোড ব্যবহার করে থাকে।
প্রচলিত টেলিফোন নম্বর থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট ৩ থেকেজ ৫ বা ৬ ডিজিটের ফোন নম্বরগুলোই বর্তমানের আলোচিত শর্টকোড। তবে দেশ অনুযায়ী এটি ভিন্নও হতে পারে। মূলত কম ডিজিটের বলেই এগুলোকে শর্টকোড বলা হয়। আর কম ডিজিট বলেই মনে রাখা এবং এর ব্যবহার সহজ। বর্তমানে ছোট বড় যে কোনো প্রতিষ্ঠান নিজস্ব সেবাদানে (মার্কেটিং এবং প্রমোশনস, অ্যালার্ট অ্যান্ড নোটিফিকেশন, টু ফ্যাক্টর অথনটিকেশন ইত্যাদি) শর্টকোড ব্যবহার করে কল সেন্টার বা কনটাক্ট সেন্টার স্থাপন করছে। যেখানে এই কোডগুলোতে কল করে বা এসএমএস পাঠিয়ে গ্রাহক তার প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণ করছেন।
অনেক সময় তার বিপরীতটাও ঘটছে। বিশ্বব্যাপী তিন ধরনের শর্টকোডের প্রচলন রয়েছে- গোল্ডেন শর্টকোড, ডেডিকেটেড শর্টকোড ও শেয়ারড শর্টকোড। নিয়ম মাফিক আইএসপি-টিএসপি (ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান) এবং পিএসটিএন (ফিক্সড ফোন) অপারেটররাই দেশে একমাত্র শর্টকোড পার্ক করে থাকে।
দেশে প্রচলিত শর্টকোড গুলো হলো: বিটিআরসি শর্টকোড
বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলারেটি কমিশন (বিটিআরসি) দুই ধরনের সেবার জন্য শর্টকোড দিয়ে থাকে। একটি হলো ব্যবসায়িক আর দ্বিতীয়টি হলো অব্যবসায়িক। বিটিআরসির নির্দিষ্ট ফি ও নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে শর্টকোড বরাদ্দ নেওয়া যায়। ক্যাটাগরি এ-ব্যবসায়িক শর্টকোডের বরাদ্দ ফি ১ লাখ এবং বার্ষিক নবায়ন ফি ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকিং সেক্টরগুলো সাধারণত এই সেবা নিয়ে থাকে।
ক্যাটাগরি বি হলো অব্যবসায়িক শর্টকোড। এর বরাদ্দ ফি ৫০ হাজার এবং নবায়ন ফি ২৫ হাজার টাকা। ই-হেলথ, ই-এডুকেশন, ই-গভর্নেন্স এ জাতীয় সেবাগুলো এই ক্যটাগরির আওতায় দিয়ে থাক। বিটিআরসি আগে ৩ বা ৪ ডিজিটের শর্টকোড বরাদ্দ দিলেও বর্তমানে ৫ ডিজিটের নম্বর বরাদ্দ দিয়ে থাকে।
মোবাইল অপারেটর (এমও) শর্টকোড: ৩, ৪ বা ৫ ডিজিটের নিজস্ব শর্টকোড রয়েছে মোবাইল অপারেটরদের । মূলত নিজেদের সেবা দেওয়ার জন্যই তারা নিজস্ব শটকোড ব্যবহার করে থাক। একজন মোবইল অপারেটরের শর্টকোড অন্য মোবাইল অপারেটর ব্যবহার করতে পারে না।
কনটেন্ট প্রোভাইডার্স শটকোড (সিপি শর্টকোড): মোবাইল অপারেটররা নানা ধরনের ভ্যালু অ্যাডেড (ওয়েলকাম টিউন, কলার টিউন ইত্যাদি) সেবা প্রদান করতে নিজস্ব শর্টকোড ব্যবহার করে থাকে। এই শটকোডের মাধ্যমে তারা নানারকম রেজিস্ট্রেশন, ভোটিং, পোলিং, কুইজ এবং বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। এগুলোর মাধ্যমে পরীক্ষার আসন বিন্যাস, ফলাফল প্রকাশসহ অনেক কিছুই জানানো যায়।
তবে বিটিআরসি থেকে শর্টকোড বরাদ্দ নিলেই কিন্তু তা ব্যবহার করা বা সেবা দেওয়া যায় না। দেশের যেকোনও জায়গায় সেবা দিতে সক্ষম আইপিটিএসপি বা পিএসটিএন অপারেটরের কাছ থেকে সেবা নিতে হয় যাদের উন্নত ও পরিষ্কার ভয়েস কল থাকতে হবে এবং কলড্রপের হার হবে শূন্য।
এ ধরনের কাজে দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানই সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে এর মধ্যে অন্যতম হলো আম্বার আইটি। প্রতিষ্ঠানটি আইটি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট ও সরকারের বিভিন্ন দফতরে বা প্রকল্পে শর্টকোডের প্রযুক্তি সেবা দিয়ে থাকে। সেবা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ব্র্যাক ব্যাংক, বিকাশ, সিটি ব্যাংক, ইউসিবিএল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও লংকাবাংলা। এছাড়া সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ হেল্পলাইন, তথ্যআপার হেল্পলাইন বা শর্টকোডে আম্বার আইটি সেবা দিয়ে থাকে। বাংলালায়ন এবং ওলোতেও শর্টকোড সেবা দিচ্ছে আম্বার আইটি।
আম্বার আইটির প্রধান নির্বাহী আমিনুল হাকিম বলেন, আম্বার আইটির বিশেষত্ব হলো এর রয়েছে ডেডিকেটেড সাপোর্ট টিম, ২৪ ঘণ্টা কাস্টমার কেয়ার, দক্ষ টিম। শর্টকোড ব্যবহারকারী গ্রাহক বা প্রতিষ্ঠান তাদের সব তথ্য পোর্টালে দেখতে পাবেন বলে তিনি জানান।