শেষ হলো প্রথম বারের মতো আয়োজিত ‘সিটি টেক সামিট ২০১৮’। বাংলাদেশে সিটিও ফোরামের আয়োজনে দুই দিন ব্যাপি এ সামিট আয়োজন করে। আয়োজনের দ্বিতীয় ও শেষ দিন রাজধানীর সোবাহানবাগে অবস্থিত ড্যাফোডিল টাওয়ারের মিলনায়তন ৭১ এ সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান মো. সবুর খান। এ সময় তিনি বলেন, বিশে^র সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সরকারের একার পক্ষে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না। সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করলে দশে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে বাধ্য। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তি সব্বোর্চ ব্যবহার করতে হবে। শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের হাতিয়ার। তাদেরকে প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারলেই আমরা নিদিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। তিনি আরও বলেন, আমাদের নিরাপদ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। প্রযুক্তি ভালো দিকের পাশাপাশি অনেক খারাপ দিকও রয়েছে। প্রযুক্তিরর ভালো ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি খারাপ দিকগুলো কুফল সম্পর্কে সবাইকে জানাতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকে সাবেক নির্বাহী পরিচালক শুভাঙ্কর সাহা। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন দিকে সবার নজর দিতে হবে। কিভাবে দেশকে অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় সে জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার বড় হাতিয়ার হলো তথ্যপ্রযুক্তি। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার যত বৃদ্ধি পাবে দেশ ততই বিশে^র মধ্যে মাথা উচু করে দাড়াতে পারবে। আমাদের দক্ষ প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত লোক গড়ে তুলতে হবে। তাদেরকে নিরাপদ প্রযুক্তি ব্যবহার শিখাতে হবে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী এ কর্মকর্র্তা।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, ড্যাফোডিল বিশ^বিদ্যালয় একটি প্রযুক্তিবান্ধব বিশ^বিদ্যালয়। প্রযুক্তি সব্বোর্চ সুবিধা ব্যবহার করা হয় আমাদের ক্যাম্পাসে। নিরাপদ প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়েয় শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সাইবার আক্রমন প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের ব্যবস্থা করতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. এসএম মাহাবুবুল হক মজুমদারসহ অনেকে। সমাপণী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি তপন কান্তি সরকারসহ সিটিও ফোরামের নির্বাহী কমিটির সদস্যারা।
দ্বিতীয় দিনের প্রধান আকর্ষন ছিলো ‘সাইবার কিসিউরিটি সচেতনতা অ্যাওয়ার্ড ২০১৮’ আয়োজন নিয়ে। এতে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে একটি কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে প্রথম তিন জনকে চ্যাম্পিয়ান, প্রথম রানার আপ ও দ্বিতীয় রানার আপ ট্রফি প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রতিযোগিতায় সেরা পাঁচ জনকে বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এর আগে ‘সিটিও টেক সামিট ২০১৮’ এর আয়োজনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে ‘সাইবার সিকিউরিটি: থ্রেডস ভালনারেভেটিস অ্যান্ড কাউন্টার মেজার’ শিরোনামে দিনের প্রথম সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি সাইবার ফোরামের কো-ফাউন্ডার ও সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের নির্বাহী সদস্য আজিম ইউ হক। এ সময় তিনি বলেন, সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলায় নিজেকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। তাহলে এই সমস্যা থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব। আমরা অনেকে না জেনে না বুঝে, নিজের অজান্তেই প্রযুক্তিগত অনেক ভুল করি। আমাদের কমিম্পউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনে এমন অনেক সফটওয়ার ডাউনলোড করে ফেলি যারা আমাদের জন্য সাইবারa হুমকি হয়ে যায়। হ্যাকাররা আমাদের সব তথ্য এ সফটওয়ারগুলো মাধ্যমে চুরি করে নিতে পারে।
দ্বিতীয় দিন সারা দিনব্যাপী ‘ ই-গর্ভারমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক’; ‘চ্যালেঞ্জ অফ ই-কর্মাস ইন বাংলাদেশ’; ‘ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল ইনোভেশন ইন বাংলাদেশ’; ডিসরাপট্রিভ টেকনোলজিস ইন পেমেন্ট সিস্টেম’; ‘সিকিউরিটি আইটি সলিউশন ইন ব্যাংকি’; পাঁচটি সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেমিনারে স্থানীয় প্রায় ৪০ জন স্পীকার অংশগ্রহন করে। এর আগে ১১ মে শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডি ক্লাবে উদ্বোধনী দুই দিনের এ সামিটের উদ্বোধন করেন আইসিটি বিভাগের সচিব সুবির কিশোর চৌধুরী। এ সময় আরও বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা এস কে সুর চৌধুরী, বেসিসের সভাপতি আলমাস কবির, সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি তপন কান্তি সরকার, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের আইটি ম্যানেজার মো. আরফে এলাহি মানিক প্রমুখ।
এবারের আয়োজনে ‘সিটিও এক্সসিলেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১৮’ প্রদান করা হয়। এ বছর সম্মানজনক এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় বেসরকারি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিনকে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেষ দুটো সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।