সাফল্য যেন সোনার হরিণ কিংবা রাতের শেষ রেলগাড়িটা। সবাই ছুটছে তার দিকে। সবার মনে প্রশ্ন, হরিণের দেখা মিলবে কবে কিংবা রেলগাড়িটা কি ধরতে পারব? কেউ সাফল্যের জন্য বছরের পর বছর চেষ্টা করে যান, কেউবা মাঠে নেমেই গোল দেন। আবার কেউ সাফল্যের জন্য পরিশ্রম না করে একঘেয়ে জীবনের ঘানি টানেন। সাফল্য বিষয়টিকে আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর সঙ্গে মেলানো যায়। ঘুড়িকে যত ওপরে ওড়ানোর চেষ্টা করবেন ততই আপনাকে বাতাসের বিরুদ্ধে সুতায় টান দিতে হবে। বাতাসের সঙ্গে তাল মেলালেই ভজকট, ঘুড়ি নিচে নামতে শুরু করবে। মার্কিন লেখক, বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা জেমস অ্যালটুচ্যার কোরা ডাইজেস্টে তাঁর পোস্টে সফল হওয়ার সাতটি উপায় নিয়ে বলেছেন।
স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যের সঙ্গে কিন্তু আমাদের অভ্যাসগুলো জড়িত। খুব সহজে বদভ্যাসে জড়িয়ে পড়া যায়, সুঅভ্যাসের জন্য সময় দিতে হয়। সাফল্যের জন্য শরীরের যত্ন নিতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়ে জোর আনতে হবে। সৃজনশীলতার বিকাশে নজর দিতে হবে। নেতিবাচক মানুষ ও পরিবেশ এড়িয়ে চলতে হবে।
সবকিছুই আজকের বিষয়
ভবিষ্যৎ কিংবা অতীত বলে তেমন কিছু নেই, বিষয়টি আপেক্ষিক। সাফল্যের জন্য আপনাকে আজ কাজ করতে হবে। আজ যদি কাজ ভালো করেন তাহলে কিন্তু দারুণ একটি ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। আর যদি আজকের দিনটিতে আপনি কোনো কাজই না করেন, তাহলে কিন্তু আগামীকাল বলবেন আমার অতীতটা তেমন ভালো কাটেনি। চেষ্টা করুন প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্ত নিজের জন্য কাজ করতে। কাজের সঙ্গে সঙ্গে পরিবার ও নিজের উন্নতির জন্য ঘড়িতে সময় রাখার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিদিন ১ শতাংশ হলেও নিজেকে বদলে ফেলার চেষ্টা করতে পারেন।
হ্যাঁ-না বলুন ভেবেচিন্তে
সফল ব্যক্তিরা হ্যাঁ-না বলেন ভেবেচিন্তে। বুদ্ধিবৃত্তিক কিংবা সৃজনশীল যেকোনো সুযোগ মিললে হ্যাঁ বলুন। আনন্দ কিংবা মনন বিকাশ হতে পারে এমন কাজকে সব সময়ই হ্যাঁ বলা শিখুন।
সরলভাবে ভাবুন, শিখুন
সবকিছুকে সাধারণভাবে ভাবতে শিখুন। শিশুরা সবকিছু সরলভাবে ভাবার চেষ্টা করে বলে তারা জীবনের সরলতা খুঁজে পায়। তাদের মতো ভাবার চর্চা করুন। নিয়মিত ধ্যান করার অভ্যাস করলে আপনার ভাবনাশক্তি ও সৃজনশীল মনের জোর বাড়বে।
পড়তে হবে অনেক
মানুষ হিসেবে আমরা সবাই সবকিছু জানি না। জানার জন্য বই পড়তে হবে। ফিকশন, নন-ফিকশন সব ধরনের বই পড়তে হবে।
বহুমাত্রিক সাফল্যের জন্য চেষ্টা করুন
মার্কিন ধনকুবের ওয়ারেন বাফেট তরুণদের এক জায়গায় বিনিয়োগ করতে পরামর্শ দেন না। তিনি অনেক জায়গায় বিনিয়োগের পরামর্শ দেন, যেন একটি বিনিয়োগে ব্যর্থ হলেও অন্য জায়গায় সামনে এগোনোর সুযোগ থাকে। একটি বিষয়ে সাফল্য এলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অন্য বিষয়ে মনঃসংযোগ করুন। আমেরিকায় মিলিয়নিয়ররা কমপক্ষে পাঁচটি ভিন্ন রকমের সূত্র থেকে অর্থ আয় করেন। আপনি কর্মজীবনে সাফল্যের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অথচ উচ্চশিক্ষার সুযোগ থাকলেও পড়ছেন না, কিংবা আপনার লেখালেখির শখকে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছেন। সফল যাঁদের আমরা উদাহরণ হিসেবে দেখি তাঁরা কিন্তু কখনোই একটি বিষয়ে আটকে থাকেননি।
ভয় বনাম জড়তা
আপনি সবার সামনে কথা বলতে ভয় পান। আবার যা বলতে চান তা ঠিকমতো বলতে পারেন না। সফল ব্যক্তিরা নিজের ভয়কে জয় করতে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আপনি যে বিষয়ে ভয় পান, সে বিষয়টিকে ভয় হিসেবে মনে করলে আজীবনই তা আপনার জন্য জড়তা। ভয় কাটিয়ে জড়তা এড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।