নাটোরের সিংড়ায় হাই-টেক পার্ক এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। আজ এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তি-প্রস্তর স্থাপন করা হয়। উদ্বোধন শেষে পলক নিজের স্কুল সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল ও কলেজে আইসিটি ভবন উদ্বোধন, নবিন বরণ ও হাই-টেক পার্ক এর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বর্তমান সরকার সারা দেশে হাই-টেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করছে। বর্তমান সরকার দেশকে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার মেনুফ্যাকচারিং এর হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ২০২১ সালের মধ্যে দেশের আইসিটি সেক্টরে এক মিলিয়ন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে এবং এই খাত থেকে বছরে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জন করতে চায়। আইসিটি ইন্ডাস্ট্রিতে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য হাই-টেক পার্ক বিনিয়োগের কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পলক বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে, একইসাথে তথ্যপ্রযুক্তিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে একরকম উল্লম্ফন সৃষ্টি হবে। এই প্রশিক্ষিত জনবলের মাধ্যমেই ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হবে। আর এক্ষেত্রে চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া উপজেলা হবে তথ্য-প্রযুক্তির মিনি সিঙ্গাপুর।
তিনি আরও বলেন, সিংড়াতে ইনকিউবেশন সেন্টার, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার ও টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ হলে চলনবিল ইকোনোমিক হাবে পরিণত হবে। এই হাই-টেক পার্কে সিংড়ার ৫ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে। সরকার একুশ শতকের উপযোগী দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্বমানের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করা হচ্ছে। শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে এই দক্ষ জনবল সৃষ্টির পথ আরো মসৃণ হবে। আর এই জনশক্তি কাজ করবে হাই-টেক পার্কে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম এখান থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তৈরি করবে বিশ্বমানের সফটওয়্যার। দেশে আইটি খাতে কাঙ্ক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হলে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির বিকল্প নেই। সেই সাথে তাদের কর্মসংস্থানও জরুরী। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেই লক্ষ্য পুরণ আরো সহজ হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন আইটি পণ্যের উপর থেকে শুল্ক হ্রাস করায় এখন দেশেই বিভিন্ন কোম্পানী মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, এসি প্রভৃতি উৎপাদন করছে। ফলে এসব পণ্য সুলভ মূল্যে ক্রেতারা নিতে পারছেন। অন্যদিকে সামস্যাং, এলজির মতো বিশ্বের নামকরা কোম্পানিগুলো এখন হাই-টেক পার্কগুলোতে কাজ করতে চাইছে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) জনাব হোসনে আরা বেগম বলেন, আইটি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে দেশের সাতটি স্থানে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্প গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। নাটর সদরেও একটি আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন শেষ হয়েছে। এখান থেকে যে দক্ষ জনসম্পদ তৈরী হবে তারা যেন তাদের মেধাকে কাজে লাগাতে পারে তাই গড়ে তোলা হচ্ছে এই হাই-টেক পার্ক। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নাটরে ৫০০০ মানুষ –এর কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া এই প্রকল্প থেকে ২৫০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ দেশের ২৮টি স্থানে হাই-টেক/সফটওয়্যার পার্ক স্থাপন করছে, এরমধ্যে ঢাকায় জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।