ডিজিটাল দুনিয়ায় বহু রকম জালিয়াতির কথা আমরা শুনে আসছি। ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিংসহ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমগুলোতে জালিয়াতির পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। একটু সতর্ক থাকলে এই ধরনের জালিয়াতির হাত থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া সম্ভব। পাঠকদের সুবিধার্থে সিম সোয়াপ জালিয়াতি থেকে নিজেকে রক্ষা করার কয়েকটি সতর্কতামূলক কৌশল তুলে ধরা হলো এই লেখায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক
টাকা তোলার জন্য ডেবিট কার্ড বা এটিএম ব্যবহার না করলেও ব্যাংক জালিয়াতদের কবলে পড়ার আশঙ্কা কিন্তু থেকেই যায়! কারণ, আপনার মোবাইল নম্বর আপনার সবকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গেই যুক্ত করা থাকে। আর আপনার এই রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরের সঙ্গে লিংক করে যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে প্রতারকরা।
প্রতারক আপনাকে সিম আপগ্রেডেশন-এর নাম করে ২০ সংখ্যার একটি সিম কার্ড নম্বর এসএমএস করতে পারে। এর পর আপনাকে আপনার নম্বরটি পাঠাতে বলতে পারে এবং ‘১’ টিপে এসএমএস কনফার্ম করতে বলতে পারে। এরই সঙ্গে ‘আপনি আপনার নতুন সিম কার্ড ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পেয়ে যাবেন’, এ কথাও বলা হতে পারে। সাবধান, নির্দেশ মেনে আপনি ‘১’ প্রেস করলেই আপনার সিম কার্ডটি ডিঅ্যাক্টিভেট হয়ে যেতে পারে। আর তার পরেই আপনার সিমের সঙ্গে যুক্ত যাবতীয় তথ্য চলে যাবে ওই প্রতারকের কাছে। একেই বলে ‘SIM SWAP’ জালিয়াতি। এর পর আপনার ওই নম্বরের সঙ্গে যে যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো যুক্ত করা রয়েছে, সেখানে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) জেনারেট করে আপনার ব্যাংক থেকে টাকা লোপাট করার অবাধ সুযোগ পেয়ে যাবে হ্যাকাররা। এ দিকে আপনার সিম ডিঅ্যাক্টিভেট থাকায় অবৈধ লেনেদেনের কোনো এসএমএস অ্যালার্টও আপনি পাবেন না।
কখনো আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কোনো তথ্য অন্য কাউকে জানাবেন না। অনেক সময় বড় অফারের লোভ দেখানো হয়। এমন লোভনীয় অফারে পড়ে আপনার মোবাইল নম্বর কোনো ওয়েবসাইটে দিবেন না।
আপনার নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট মাঝ মাঝে চেক করুন। আপনার অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কোনো এসএমএস বা ওটিপি সম্পর্কে কারও কাছে শেয়ার করবেন না।
যে শাখায় আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি চালু করেছেন সেখানে গিয়ে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ‘ইনস্ট্যান্ট অ্যালার্ট’ সার্ভিসটি চালু করে নিন। এতে করে আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে পারবেন।
কখনো কেউ যদি আপনার মোবাইলের সিম আপগ্রেডেশন বা সিম ব্লক করার কথা বলে তাহলে তার সঙ্গে কোনো রকম তর্কে না জড়িয়ে কলটি কেটে দিন। অনেক সময় জালিয়াত চক্রের লোকজন বলে সে মোবাইল নেটওয়ার্কের কাস্টমার কেয়ার থেকে ফোন করেছে। এমন বললেও আপনি তাতে গুরুত্ব দিবেন না। এমন সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডারদের জানান।