মহাশূন্য নিয়ে মানুষের গবেষণার শেষ নেই, আর মহাশূন্যে মানুষের গতিবিধি এখন যেন কোনও ব্যাপারই নয়। তবে প্রযুক্তি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে শুধু মহাকাশচারীরাই নয়, ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষও এমন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেবেন বলে জানা গেছে।
চাঁদের মাটিতে মানুষের পা পড়েছে অনেক আগেই। তারপরে মঙ্গল গ্রহ। এবার মহাকাশ বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য সূর্য। তবে সেখানে পা রাখা দূরস্থান, তার কাছাকাছি পৌঁছানোই সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও, নাসা থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সাধারণ মানুষকে সূর্যকে ছোঁয়ার নাসার প্রথম ‘মিশন’-এ ভাগ নেওয়ার জন্য। নাম দেওয়া হয়েছে ‘পার্কার সোলার প্রোব মিশন’।
এই সেই মহামূল্যবান টিকিট।
চলতি মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে। নাসার তথ্য অনুযায়ী, ছোট একটি গাড়ির সাইজের স্পেসক্র্যাফট, পৃথিবীর মাটি থেকে রওনা হয়ে সোজা যাবে সূর্যের দিকে। সূর্য পৃষ্ঠ থেকে ৪০ লাখ মাইল দূরত্ব দিয়ে, প্রায় ৪৩০,০০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় গতিতে স্পেসক্র্যাফটটি যাবে বলে জানিয়েছে নাসা।
প্রসঙ্গত, এই গতিতে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে মাত্র এক মিনিটেই পৌঁছে যাওয়া যাবে টোকিও শহরে। অর্থাৎ, এক মিনিটে প্রায় ১০, ৯০৫ কিলোমিটার। সূর্যের ম্যাগনেটিক ফিল্ড, প্লাজমা ও এনার্জি পার্টিকাল এবং সূর্যের হাওয়া, মূলত এই বিষয়গুলি নিয়ে তথ্য ও ছবি সংগ্রহের কাজ করবে এই মহাকাশযান।
জানা গেছে, সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহাকাশযান ও তার যন্ত্রপাতির চারপাশে সাড়ে ৪ ইঞ্চির একটি মোটা ‘কার্বন কম্পোজিট’ দেওয়াল থাকবে। ২৫০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই এই কার্বন কম্পোজিট শিল্ড।
সূর্য-যাত্রার এই মিশনের নাম প্রথমে দেওয়া হয়েছিল ‘সোলার প্রোব প্লাস’। ২০১৭ সালের মে মাসে, তা পাল্টে দেওয়া হয় ‘পার্কার সোলার প্রোব মিশন’। মহাকাশ বিজ্ঞানী ইউজিন পার্কারের নামানুসারে। প্রসঙ্গত, এই প্রথম নাসা তার কোনও মিশনের নাম রাখলো ব্যক্তির নামে। এর কারণ, ‘হিলিওফিজিক্স’ ও ‘স্পেস সায়েন্স’-এ বিজ্ঞানী পার্কারের অবদান।