মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং আকর্ষনকে তুলে ধরা হয়। শিশুদের অঙ্কন প্রতিযোগীতা, চিত্র প্রদর্শনী, ফটো এক্সিবিসন ছাড়াও আয়োজনে ছিল আলোচিত চলচিত্র ‘আয়নাবাজি’র প্রদর্শন। কাতারের রাজধানী দোহায় বাংলাদেশ দূতাবাস এবং বাংলাদেশ ফোরাম কাতারের যৌথ আয়োজনে এই ফেস্টিভ্যাল শেষ হয়েছে গত ২৫ মার্চ, সোমবার।
এর আগে গত ১৯ মার্চ, মঙ্গলবার বিকেলে কাতার কালচারাল ভিলেজ, ‘কাতারা’য় ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করেন দোহায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ। এসময় আয়নাবাজি চলচিত্রের আনুষ্ঠানিক প্রিমিয়ার শোর উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছবির প্রযোজক টপ অব মাইন্ডের সিইও এবং গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোর অনারারি কনসাল জিয়াউদ্দিন আদিলকে সন্মাননা প্রদান করেন রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ।
বাংলাদেশ ফোরাম কাতার এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় হল ভর্তি দর্শকের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত প্রিমিয়ার শোতে অংশ নেন কাতার প্রবাসী বাংলাদেশীরা। অনুষ্ঠানে কাতারের নাগরিক ও বিভিন্ন পর্যটকরা ছাড়াও ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া, উরুগুয়ে, পর্তুগাল, ইউক্রেণ এবং তুরস্কসহ ২৫টি দেশের রাষ্ট্রদূতেরা আয়নাবাজি দেখতে অংশ নেন।
ফেস্টিভ্যালে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শণীতে বিচারক হিসেবে বিখ্যাত আলোকচিত্রী নাইজেল ডোয়েজ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছাড়াও কাতারার ইন্টান্যাশনাল এ্যাফেয়ার্সের ম্যানেজার মারিয়াম মজিদ আল সাদ উপস্থিত ছিলেন। উৎসবের তৈলচিত্র কর্মশালায় রাষ্ট্রদূতদের স্ত্রীরা ছাড়াও দোহার গণমাণ্য ব্যাক্তিরা অংশ নেন।
আয়নাবাজির প্রদর্শণ ছাড়াও বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালের উল্লেকযোগ্য দিক ছিল চিত্র প্রদর্শনী ও ফুড ফেস্টিভ্যাল। ফেস্টিভ্যালের অংশ হিসেবে মাশুর-উল-হক মেমোরিয়ায় (এমএইচএম) স্কুল এন্ড কলেজে বাংলাদেশ ও কাতারের ঐতিহ্য নিয়ে আয়োজন করা হয় শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বয়সের ৮০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগীতায় অংশ নেন। এছাড়াও ছবি তোলার কর্মশালা আয়োজন করা হয়।
এসময় বাংলাদেশ ফোরাম কাতারের সভাপতি ইফতেখার আহমেদ জানান, সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল পালন করেছি আমরা। এর মধ্যে বাংলা চলচ্চিত্র আয়নাবাজি ছিল একটি অংশ। দর্শকদের হৃদয়কাড়া এমন একটি সুস্থ ও ব্যতিক্রমী ছবি উপহার দেয়ার জন্য ছিল আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস। এছাড়াও শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগীতাতেও অংশগ্রহণ ছিল লক্ষ্যনীয়।
কাতারে বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, কাতারে দীর্ঘদিন পর বাংলা চলচ্চিত্র হিসেবে প্রদর্শিত হলো আয়নাবাজি। আলোচিত, ব্যতিক্রমধর্মী ও আন্তর্জাতিক মানের বাংলা ছবি আয়নাবাজির প্রিমিয়ার শো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্রের সীমা আরো বৈশ্বিক পর্যায়ে পৌছে গেল।