স্মৃতিভ্রম ও স্নায়ুজনিত মস্তিষ্ক রোগের প্রতিষেধকের জন্য দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্যের একদল চিকিত্সক প্রথমবারের মতো প্রাণীর মস্তিষ্কের কোষ মৃত্যুর প্রতিষেধক আবিষ্কারের কথা জানালেও শেষ পর্যন্ত তারা ঘোষণা দেন প্রতিষেধকটি মানুষের জন্য উপযুক্ত নয়। এরপর ২০১৭ সালে লেইসেস্তেরের এমআরসি টক্সিকোলজি ইউনিটের অধ্যাপক জিওভানা মলস্নুসি স্মৃতিভ্রম রোগীর ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করেন দুটি ওষুধ।
আর এবার যুক্তরাষ্ট্রের বায়োটেকনোলজি কোম্পানি ‘বায়োজেন’ এবং জাপানের ওষুধ তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান ‘এসাই’ বুধবার স্মৃতিভ্রম রোধের ওষুধ আবিষ্কারের কথা জানিয়েছে। তাদের এই যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, এই ওষুধটি মূলত একটি এন্টিবডির কাজ করে। এই এন্টিবডির নাম বিএএন২৪০১। এই এন্টিবডিটি মস্তিষ্কে নতুন করে বেটা অ্যামিলয়েড ক্লাস্টার তৈরির হার কমানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের স্মৃতিভ্রমের জন্য দায়ী ক্ষতিকর উপাদান শতকরা ৭০ ভাগ পর্যন্ত কমিয়ে আনার কাজ করে। মস্তিষ্কে তৈরি হওয়া বেটা আমিলয়েড স্মৃতিভ্রমের কাজকে ত্বরান্বিত করে। শিকাগোতে অনুষ্ঠিত অ্যালঝেইমারস এসোসিয়েশনের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলেন, ১৬১ জন রোগীর ওপর ১৮ মাস ধরে দুই সপ্তাহ পর পর ওষুধ প্রয়োগ করে দারুণ ফল পাওয়া গেছে। কনফারেন্সে অংশ নেওয়া বিজ্ঞানীরা এই ফলাফলকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। যদিও এসাই এবং বায়োজেন তাদের গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধান একটি অংশ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এই গবেষণায় নিযুক্ত বিজ্ঞানীরা বলেন, তাদের তৈরি করা এন্টিবডি প্রয়োগের পর দেখা যায় স্মৃতিভ্রমের হার কমেছে যা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা ‘সতর্কতার সঙ্গে আশাবাদী’ হতে চান। তাদের ঐ গবেষণার ফলাফল ভবিষ্যতে একই ধরনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ক্ষেত্রে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে।
তথ্যসূত্র:সিএনএন