ধরুন আপনার বন্ধু ‘ক’-কে আপনার খুব দেখতে ইচ্ছা করছে। মোবাইলে বন্ধুর নাম্বারে কল করলেন আর কিছুক্ষণ পর বন্ধু আপনার সামনে হাজির।
কথা হচ্ছে আপনাদের মুখোমুখি! বিষয়টি স্টার ওয়ারসের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মতো হলেও এটিই হতে যাচ্ছে আগামীর যোগাযোগ প্রযুক্তি।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হলোগ্রাফিক যোগাযোগ বাস্তব রূপ নিতে যাচ্ছে। যে কারও সঙ্গে যে কোনো সময় যে কোনো স্থানে মুখোমুখি আলাপ করা সম্ভব হবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই। আর এজন্য প্রয়োজন হবে না কোনো ভিআর হেডসেট। রিচার্ড ফ্রগি মনে করেন ফাইভ জি আসার সঙ্গে সঙ্গে এসব প্রযুক্তিও চলে আসবে। রিচার্ড ফ্রগি নলেজ ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের একজন বিশেষজ্ঞ।
বর্তমানে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি, অগম্যান্টেড রিয়্যালিটির অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য একটি হেডসেট মাথায় পরতে হয়, তবে সামনের দিনে এমন প্রযুক্তি আসবে যা স্মার্টফোন থেকেই কৃত্রিম বাস্তবতাকে প্রজেক্ট করতে পারবে।
রিয়েল টাইম হলোগ্রাফিক যোগাযোগের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে অধ্যাপক মিশচা ডোহলার ও তার মেয়ের একটি কনসার্ট। হলোগ্রামের সম্ভাবনাকে প্রদর্শন করতে তিনি লাইভ দর্শকদের সামনে একটি গান পরিবেশন করেন। যেখানে মিশচা থাকেন স্টেজে পিয়ানো বাজান এবং তার মেয়ে হলোগ্রামের মাধ্যমে গান পরিবেশন করেন।
ভোডাফোন, ভ্যারাইজনসহ বিশ্বের বড় বড় মোবাইল কোম্পানিগুলো হলোগ্রাফিক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে। তবে এ প্রযুক্তির জন্য ফাইভ-জির বাজারে আসা জরুরি। কারণ বর্তমান মোবাইল ডাটা স্পিডে লেটেন্সি বেশি থাকায় এ ধরনের যোগাযোগ খুব একটা সুখকর হবে না। ফাইভ-জি এই লেটেন্সিকে কমিয়ে আনবে চারশ’ ভাগ। যা একেবারেই রিয়াল টাইমের মতো স্বাদ দেবে।
ফাইভ জি টেলিভিশন শিল্পকে নতুন জীবন দেবে বলেও মনে করেন ক্লেয়ার হার্ভি। কারণ ফাইভ জি ক্যামেরাগুলো ভিডিও ফুটেজকে সরাসরি ক্লাউডে ট্রান্সফার করতে পারবে। অর্থাৎ মাঝখানে প্রয়োজন হবে না ব্রডকাস্ট ট্রাক ও স্যাটেলাইট সংযোগ ইত্যাদি। এতে টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠান বানানো যেমন সহজ হবে তেমন খরচও কমে আসবে অনেক। বড় থেকে ছোট সব ইভেন্টই কভার করা যাবে। এতে নাগরিক সাংবাদিকতার বিপ্লব শুরু হবে।
বহু সম্ভাবনার ফাইভ জির সুবিধা পেতে ২০২১ সাল পর্যন্ত বা তারও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে। বর্তমান মোবাইল ডাটা নেটওয়ার্ক থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হওয়ায় ফাইভ জির অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে একেবারে শুরু থেকে।
এই জন্যই এতো দেরি। এদিকে অনেকেই মনে করছেন ফাইভ জি এলে শহুরে মানুষরা যেমন প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে যাবে সেই সঙ্গে ডিজিটাল ডিভাইভ আরও প্রকট হবে।