যাত্রীদের আরও উন্নত সেবা দেওয়ার উদ্দেশে আধুনিক বিমানবন্দর নির্মাণে ‘স্মার্ট এয়ারপোর্ট আইসিটি সল্যুশন’ নিয়ে আসলো বিশ্বের সেরা তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। সম্প্রতি শেষ হওয়া ‘প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল এক্সপো-২০১৮’তে নতুন এই প্রযুক্তি প্রদর্শন করে প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রদর্শনীর মূল থিম ছিল ‘লিডিং নিউ আইসিটি, দ্য রোড টু ডিজিটাল এভিয়েশন’। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৭০০০ প্রতিনিধি এবং ২২৫ প্রদর্শক ওই প্রদর্শনীতে অংশ নেন। ওই প্রদর্শনীতে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক উন্নয়ন ও উদ্ভাবন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
ওই প্রদর্শনীতে হুয়াওয়ে এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রুপের ট্রান্সপোর্ট সেক্টরের প্রেসিডেন্ট ইউয়ান জিলিন বলেন, ‘স্মার্ট এয়ারপোর্টের ধারণা এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। কারণ বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। ফলে এয়ারপোর্টগুলোতে ফ্লাইট সার্ভিস, প্যাসেঞ্জার সার্ভিস এবং এয়ারপোর্ট পরিচালনা ব্যবস্থা ডিজিটাল ও দৃশ্যমান হচ্ছে। হুয়াওয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এয়ারপোর্টগুলোতে নতুন নতুন আইসিটি প্রযুক্তি ব্যবহারে সহায়তা করছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ক্লাউড সিস্টেম, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমতার ব্যবহার। মূলত এয়ারপোর্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত, দক্ষভাবে এয়ারপোর্ট পরিচালনা, সেবার মান বাড়ানো এবং যাত্রীদের জন্য সবচেয়ে ভালো ভ্রমণ পরিবেশ নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
‘স্মার্ট এয়ারপোর্ট আইসিটি সল্যুশন’ দিতে হুয়াওয়ে ট্রাভেল স্কাই, ব্রিলিয়ান্ট টেকনোলজিস, টেরা ভিশন, হুয়াডং ইলেট্রনিক ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি এবং ক্রাইস্টোনের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে। মূলত দক্ষভাবে এয়ারপোর্ট পরিচালনা, নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং যাত্রী সেবার মান বাড়াতেই তারা কাজ করছে। হুয়াওয়ের এসব আধুনিক সল্যুশন ভবিষ্যতে স্মার্ট এয়ারপোর্ট গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। উদাহরণস্বরূপ, হামাদ ইন্টারন্যশনাল এয়ারপোর্টের ধারণক্ষমতা বাড়াতে আগামী পাঁচ বছরের জন্য হুয়াওয়ে সেখানে ওশানস্টোর ৯০০০ প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে।
এ বিষয়ে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস বাংলাদেশ লিমিটেডের এন্টারপ্রাইজ বিজনেসের প্রধান ইয়াং গুওবিন বলেন, ‘যাত্রীদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আনন্দদায়ক করতে হুয়াওয়ে নিরাপত্তা, দক্ষতা এবং সেবা নিয়ে কাজ করছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে এবং খুব শিগগিরই হয়তো নতুন নতুন ও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন বিমানবন্দর তৈরি হবে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের স্মার্ট এয়ারপোর্ট সল্যুশন বাংলাদেশকে বিশ্বমানের বিমানবন্দর নির্মাণে সাহায্য করতে পারে। আর শীর্ষ মানের তথ্যপ্রযুক্তি সমাধান প্রদান করে আমরাও মানুষের কাছাকাছি যেতে চাই।’
জানা গেছে, হুয়াওয়ে এয়ারপোর্টগুলোতে ইন্টেলিজেন্ট প্যানোরামিক ভিডিও সার্ভেইলেন্স প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। ফলে এয়ারফিল্ড, টার্মিনাল বিল্ডিং এবং পাবলিক এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ওইসব ক্যামেরাতে মানুষের মুখমন্ডল চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, যা এয়ারপোর্ট পরিচালনা ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং যাত্রীদের শনাক্ত করতে সহায়তা করবে।
ইন্টিগ্রেটেড কমিউনিকেশন্স প্ল্যাটফর্মের (আইসিপি) মাধ্যমে হুয়াওয়ে এয়ারপোর্টগুলোতে বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। যার মধ্যে থাকবে ইএলটিই ব্রডব্যান্ড কমিউনিকেশন্স, ভিডিও কনফারেন্স এবং আইপি টেলিফোন ব্যবস্থা। এটা এয়ারপোর্ট পরিচালনা ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ করবে এবং রিয়েল টাইম অ্যাসাইনমেন্ট ও কাজের রিপোর্টিং এর মাধ্যমে এয়ারপোর্টের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে।
এছাড়া এয়ারপোর্টগুলোতে ইন্টারনেট অব থিংস ও বিগ ডাটা অ্যানালিটিকসসহ ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে হুয়াওয়ের অংশীদার হয়েছে ক্রাইস্টোন এবং ওভিফোন। এই প্ল্যাটফর্মটি এয়ারপোর্ট কর্মীদের অ্যাপ্রোন নেভিগেশন লাইটিং ব্যবস্থাপনা, অবস্থান এবং ট্রাকিংয়ে সহায়তা করবে। এছাড়াও এই প্রযুক্তি এয়ারপোর্টের পরিবেশ মনিটরিংয়েও সহায়তা করবে, যা এয়ারপোর্টের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়াবে।
হুয়াওয়ের প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিমানবন্দর স্মার্ট হবে
previous post