‘সাইবার ক্রাইম অ্যান্ড ডেটা ব্রিচ ইন প্যান্ডেমিক’ Cyber Crime and Data Breach in Pandemic শিরোনামে সিটিও ফোরাম আয়োজিত ৫ম জুম সেশন অনুষ্ঠিত । মহামারীর সময় হ্যাকাররা কিন্তু বসে নেই, বরংচ তারা আরো বেশি সক্রিয়। কারন এখন প্রায় সবাই জেনে না জেনে টেকনোলোজি গুলো ব্যাবহার করছে। সম্প্রতি ইন্টারপোল থেকেও বিশ্ব ব্যাপী সাইবার এটাকের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে সাইবার আক্রমনের রেড জোনে ।
সিটিও ফোরামের সভাপতি জনাব তপন কান্তি সরকার বলেন “ব্যাংক গুলোকে সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের আইটি টিম কে আবশ্যিক ভাবে বাসায় থেকে কাজের সুযোগ দিতে হয়েছে, রিমোট সেটাপ দিতে হয়েছে, সাইবার আক্রমনের ঝুকি কে মাথায় রেখে ডিজিটাল মাধ্যমে সেবা বাড়াতে হয়েছে, । আই টি টিম ম্যাম্বার রা নিজেদের বাসায় হোম এনভায়রন্মেন্টে কাজ করছে। সেখানে না না ধরনের সফটওয়্যার এর ক্র্যাক বা পাইরেটেড ভার্সন সেটাপ করা থাকে যা সাধারনত অফিস এনভায়রনমেন্টের কম্পিউটারে থাকে না, এতে করে ঝুকি বেড়ে যাচ্ছে। ভিপিএন বা প্রাইভেট নেটোয়ার্ক ব্যাবহার করে বাসা থেকে ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানের মূল ডাটাবেজে ঢোজা হচ্ছে, কিন্তু সে চ্যানেল সিকিউর করতে কতটুকু ব্যাবস্থা নিয়েছি তা জানা নেই।
আমাদের প্রায় প্রতিটা ব্যাংক প্রতিনিয়ত মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ বেজ ইন্টারনেট ব্যাংকিং নিয়ে আসছে, এবং এই টেকনোলজি গুলোই সর্বাধিক ভালনারেবল বা সিকিউরিটি ঝুকি তে আছে তবে ব্যাংক গুলো এর সিকিউরিটির দিকে নজর দিচ্ছে না বলেই চলে। ব্যাংক গুলো হ্যাকারদের সব থেকে আগ্রহের যায়গা। কারন এখান থেকে সরাসরি লাভোবান হওয়া সম্ভব।
আমাদের কানে আসছে এরই মধ্যে অনেক গুলো সাইবার আক্রমন হয়েছে কিন্তু প্যানিক সৃষ্টি হবে এই দোহাই দিয়ে নিউজ করতে দেয়া হচ্ছে না। এতে করে ঘটনা গুলো চাপা পরে যাচ্ছে এবং আরো ভয়ংকর হয়ে উঠছে।
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে অল্প কিছু প্রতিষ্ঠান বাদে বেশির ভাগই বিশেষ করে ব্যাংক প্রতিষ্ঠান তাদের আইটি বা টেকনোলজির প্রতি ইনভেস্টমেন্টে তেমন আগ্রহ দেখান না তবে এই টেকনোলোজি এডাপ্টেশনই করোনা ভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় ব্যাংক গুলোকে শক্তি যুগিয়েছে। ব্যাংক গুলো বরাবরই সাইবার আক্রমনের ঝুকির শীর্ষে অবস্থান করে আবার অপরদিকে নতুন ধরনের টেকনোলজি ব্যাবহার এর ফলে এই সংকটের সময় সাইবার অপরাধিরা আক্রমন বহু অংশে বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও খুব কম সংখ্যক ব্যাংকিং নেতৃত্বই এই সমস্যা কে জটিল সমস্যা হিসেবে দেখে থাকেন। তবে এই সাইবার ঝুকিই তাদের গ্রাহকদের জন্য উল্লেখযোগ্য ক্ষতির কারন হতে পারে।“
আয়োজনের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক জনাব রেজাউল করিম স্যার বলেন “ব্যাংক গুলোর উচিৎ ডিজিটালাইজেশন অব্যাহত রাখা যাতে করে এই মহামারীর সময় অত্যাবশ্যকিয় কারন ছাড়া ব্যাংক গুলোতে উপস্থিত হয়ে সেবা নিতে না হয়, এর পাশা পাশি সাইবার আক্রমনের ঝুকি কে সর্বচ্চো ঝুকি মনে করে কর্মকর্তা কর্মচারিদের পাশাপাশি গ্রাহকদের কেউ যথেষ্ট সচেতন করতে থাকা।“
ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন সম্ভবত আর্থিক সেবার সাথে দীর্ঘদিন যাবত জরিত, কিন্তু এখন তা পূর্বের যে কোনও সময়ের থেকে গুরুত্বপুর্ণ। যে সকল ব্যাংক গুলো তাদের ডিজিটাইজেশন এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো সে সকল ব্যাংক গুলো এখন দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হিসেবে দেখতে পারে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে, এই কোভিড ১৯ মহামারী আর্থিক খাতে টেকনোলজির ব্যাবহার মোটা অক্ষরে তুলে ধরেছে, আমাদেরকেও এই দিকটি বিবেচনা করে সংকট কে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
সিটিও ফোরাম একটি নন পলিটিক্যাল নন প্রফিটেবল অরগানাজেশন হিসেবে এই পেন্ডেমিক এর শুরুথেকে এই নতুন উদবুদ্ধ্য সময়ে নলেজ শেয়ারিং ও রিয়েল ফ্যাক্ট গুলো নিয়ে অনলাইন সেশন করে আসছে বিগত ৪টি সেশনে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ক্লাউড কম্পিউটিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি, রোল অফ আই টি ইন ব্যাংক এবং নিউ ডিজিটাল অরগানাজেশন কালচার এর উপর আয়োজিত হয়েছে যেখানে প্রতিটি সেশনে জুম লিংকের মাধ্যমে সিটিও ফোরামের এডভাইজর প্যানেল, ফেলো, এসোসিয়েট সহ বিভিন্ন ব্যাংক বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের এমডি, ডিএমডি, সিটিও/সি আই ও সহ প্রায় ২ শত সদস্য যোগদান করেছেন সেই সাথে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন দফতরের সেক্রেটারি, এডিশনাল সেক্রেটারি গন।
আজকের আয়োজনে জনাব তপন কান্তি সরকারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
জনাব রেজাউল করিম, বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমাদের সিটিও ফোরামের এডভাইজর প্রফেসর ড সৈয়দ আখতার হোসেন, ডিপার্ট্মেন্ট চেয়ার, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের চিফ ইনফরমেশন সিকিউরিটি অফিসার মেহেদি হাসান।
গ্রামিন ফোনের ইনফরমেশন সিকিউরিটি আর্কিটেক্ট শাহাদাত হোসেন।
এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সিটিও ফোরামের এক্সিকিউটিভ কমিটি মেম্বার আজিম উ হক।