সম্প্রতি শেনজেনে প্রযুক্তি বিষয়ে আয়োজিত‘২০১৮ অপো টেকনোলজি এক্সিবিশন’-এ অপো বেশ কিছু নতুন ঘোষণা দিয়েছে। অপো’র প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও টনি চেন জানান,প্রতিষ্ঠানটি আগামী বছর তাদের বিনিয়োগ খাতে ১০ বিলিয়ন আরএমবি (প্রায় ১.৪৩ বিলিয়ন আমেরিকান ডলার) ব্যয় করতে চলেছে যা তাদের বার্ষিক বিনিয়োগকে ১৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেবে। তিনি বলেন, অপো প্রতি বছর বিনিয়োগের হার বাড়াতে থাকবে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে মূলধন বাড়িয়ে সাপ্লাই চেইনের সাথে সমন্বয় সাধন করবে। এছাড়াও ইন্টারনেট অব থিংসর (আইওটি)-এরএই যুগে গ্রাহকদের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলার উদ্দেশ্যে অপো আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্সকে কাজে লাগিয়ে স্মার্ট ডিভাইস, স্মার্টওয়াচ ও স্মার্ট হোম প্রযুক্তির পণ্য তৈরি করবে।
অপো ৫জি-র অগ্রগতিকে স্বাগত জানাতে বাধ্য
প্রযুক্তিবিষয়কপ্রতিষ্ঠানহিসেবেসবসময়ইঅপো’রলক্ষ্যথাকে৫জি-রমতোআধুনিকপ্রযুক্তিরউন্নয়ন। টনি চেন জোর দিয়ে বলেন, “অপো ৫জি-র অগ্রগতিকে স্বাগত জানাতে বাধ্য। অপো’র ৫জি স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশের প্রচেষ্টার পাশাপাশি ৫জি প্লাসযুগে অ্যাপ্লিকেশন সম্ভাবনা আবিষ্কারের ধারাবাহিকতা ৫জি-র মূল্য নির্ধারণে বিশাল ভূমিকা রাখবে। গ্রাহকদেরকে ভিন্নধর্মী, প্রয়োজনীয়, সুবিধাজনক ও নিরবচ্ছিন্ন স্মার্টফোন অভিজ্ঞতা উপহার দেয়ার জন্য অপো অ্যাপ্লিকেশন ও ইউজার ইনসাইটসের সাথে ৫জি-কে পুরোপুরি সমন্বয় করবে”।
২০১৫ সালেই অপো ৫জি বিভাগ গঠন করে ৫জি কাঠামোয় গবেষণা ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া শুরু করে। ২০১৭ সালে যখন ৫জি-র অগ্রগতি স্থবির ছিল, অপো দ্রুততার সাথে ৫জি পণ্য উন্নয়নে বিনিয়োগ করে এবং ৫জি সিগন্যালিং ও ডেটা লিংকসের ইন্টার-অপারেবিলিটি প্রক্রিয়ায় শীর্ষ ভূমিকা রাখে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে অপো ৫জি স্মার্টফোনে প্রথম সফল সংযোগ ঘটায়।
৫জি যুগে আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স-এর সুবিধা
ফটোগ্রাফি, ফেসিয়্যাল রিকগনিশন ও ফিংগারপ্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশনসহ বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনে অপো আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি প্রয়োগ করেছে। ইতোমধ্যে তারা বাজারে এনেছে আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স সম্পন্ন বিউটি ক্যামেরা, থ্রিডি পোর্ট্রেট লাইটিং ও ইন্টেলিজেন্ট রিকগনিশন সিনারিও সহ নানান উদ্ভাবনী ফিচার। চেন বলেন, “৫জি যুগেই আমরা আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্সের সুবিধাগুলোর প্রকৃত প্রয়োগ দেখতে পাবো। আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স একই সাথে একটি সক্ষমতা ও একটি মানসিক অবস্থা। আর্টফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্সের প্রয়োগ নিয়ে আমাদের সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা রয়েছে।” আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স কাজে লাগিয়ে ক্রমাগত ইউজার হ্যাবিটস পর্যবেক্ষণ করার ফলে অপো’র স্মার্টফোনগুলো উন্নত সেবা ও আরও পার্সোনালাইজড অভিজ্ঞতা প্রদানে সক্ষম।
চেন আরও বলেন, “স্মার্টফোনই ভবিষ্যতে ইন্টেলিজেন্ট ব্যক্তিগত সহকারীর কাজ করবে। অপো এটি নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স প্রয়োগের ক্ষেত্রে স্মার্টফোন সেরা প্রযুক্তিগুলোর একটি, যদিও এই ক্ষেত্রে আরও উন্নয়ন দরকার। অপো সর্বাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন প্রযুক্তি ও অ্যাপ্লিকেশনের উপর মনোযোগ দিয়ে আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্সের প্রয়োগে জোরালোভাবে কাজ করে যাবে।”
স্মার্ট ডিভাইস ও হোমে প্রযুক্তি, শিল্পকলা ও মানবিকতার সমন্বয়
৫জি, আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স ও আইওটি-এর যুগে অপো শীর্ষস্থান ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর জানিয়ে টনি চেন তাঁর বক্তব্য শেষ করেন। “আমাদেরকে সাহসের সাথে যুগান্তকারী উদ্ভাবনের পথে এগিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতে অপো স্মার্ট ডিভাইস ও স্মার্ট হোমে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের সাথে শিল্পকলা ও মানবিকতার সমন্বয় ঘটিয়ে মানুষের উন্নত জীবনের প্রত্যাশা পূরণে অবদান রেখে যেতে চায়।”
অপো সবসময়ই সর্বাধুনিক প্রযুক্তি খাতে গবেষণা ও উন্নয়নে বিশেষ জোর দিয়ে এসেছে। অপো তাদের বিস্তৃত ইনসাইটকে ভিত্তি করে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করে থাকে। অভ্যন্তরীণ অংশীদারদের আইডিয়া ও প্রযুক্তিগত চিন্তাভাবনা শেয়ার করার সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্যেই দুই দিনব্যাপী অপো টেকনোলজি এক্সিবিশন আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটির চারটি প্রধান ভাগ ছিল আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স, বিগ ডেটা, ক্লাউড প্লাসআইওটি ও ৫জি। ১২টি এক্সিবিশন এলাকায় ৮০টিরও বেশি উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হয়।
অপো’র বর্তমান গবেষণা ও উন্নয়ন সক্ষমতা ও ভবিষ্যতের রোডম্যাপ প্রদর্শনীর পাশাপাশি এই বছরের এক্সিবিশনের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির বিশেষজ্ঞরা সংলাপে অংশ নেন, যার মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রযুক্তিগত উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হয়েছে।