যুক্তরাজ্যে নিখোঁজ এক ব্যক্তিকে খুঁজে বের করেছে পুলিশের ড্রোন। পানিতে বুক পর্যন্ত ডুবে থাকা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ওই ব্যক্তির মতে বেঁচে আসতে পারায় তিনি “ভাগ্যবান”। যুক্তরাজ্যের নরফক-এর ব্র্যানক্যাস্টার-এর ৭৫ বয়সী পিটার পাফ শনিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে মাঠে হাঁটতে গিয়েছিলেন। এরপর তিনি নিখোঁজ হোন, তার সন্ধানে শুরু হয় বড় অভিযান। এক পর্যায়ে ড্রোন দিয়ে সন্ধান শুরুর পর রোববার টিচওয়েল মার্শেস-ও তাকে নলখাগড়ায় ঢাকা পানিতে পাওয়া যায়, খবর বিবিসি’র।
পুলিশের দাবি, তাকে দ্রুত খুঁজে পেতে এই প্রযুক্তি মূল সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাফ বলেছেন, তিনি ওই এলাকা খুব ভালোভাবে চিনতেন আর মাটি সরে যেতে থাকলেও তার মধ্যেই হাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন সামনে হয়তো মাটি কিছুটা ভালো হবে। কয়েকবার পড়ে যাওয়ার পর তিনি বিশ্রাম নিতে শুরু করেন। কিন্তু রাত নয়টার দিকে ঢেউ আসা শুরু হয়। পাফ সাঁতরিয়ে সামনের মাঠে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু নলখাগড়ায় আটকানোর কারণে তা পারেননি।
“আমি এ থেকে মুক্ত হতে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। আমার পা দুটো আটকে যাওয়ায় আমি হামাগুড়ি দিতে পারিনি আর আমি দাঁড়িয়ে হাঁটতে গেলেও একই অবস্থা, পা দুটো আটকে ছিল। তাই এক সময় আমি ভাবলাম, তারা আমাকে খোঁজা শুরু করবে”, বলেন পাফ। মাথার উপরে হেলিকপ্টারের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন কিন্তু তার ধরণা ছিল ঘাস আর নলখাগড়ারে কারণে তাকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। তিনি বলেন, “আমাকে এটি স্বীকার করতেই হবে যে বাঁচতে পেরে আমি ভাগ্যবান। কারণ আমার বয়স ৭৫ আর আমার হৃদযন্ত্র এটি ভালোভাবে নেবে না।” সারারাত ধরে নলখাগড়ার পানিতে নাকানিচুবানি খাওয়া পাফ তাকে উদ্ধারের কথা মনে করতে পারেননি। তার উদ্ধারকে ‘অলৌকিক’ হিসেবে দেখছেন পাফ-এর স্ত্রী। তিনি বলেন, “জরুরী সেবা আর প্রযুক্তি তাকে বাঁচিয়েছে কিন্তু তার শরীর একদম ঠিক থাকায় তিনি বেঁচে গিয়েছেন।”
স্থানীয় পুলিশের সার্জেন্ট অ্যালেক্স বুশার বলেন, “পুলিশ ড্রোনটি ছাড়া ওই সময়ে আমরা তাকে শনাক্ত করতে পারতাম না।” “এটি আমাদের এমন এলাকায় সন্ধান চালানোর সুযোগ দিয়েছে যেখানে যাওয়া কষ্টসাধ্য আর হয়তো এখানে হেলিকপ্টার যেতেই পারতো না।” ২২ ঘণ্টার ধরে নিখোঁজ থাকা পাফ-এর সন্ধানে চালানো অভিযানে একটি পুলিশ হেলিকপ্টার, এইচএম কোস্টগার্ড, একটি লাইফবোট আর ৫০ জন পুলিশ সদস্য অংশ নেন।
তথ্যসূত্র:বিবিসি