ফেসবুক বলেছে, প্রায় আট কোটি ৭০ লাখ গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা (সিএ)। রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ফেসবুক থেকে অনৈতিকভাবে ওই তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে ফেসবুক। এর আগে ধারণা করা হচ্ছিল, পাঁচ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য ফেসবুক থেকে নিয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, যে ৮ কোটি ৭০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হয়েছে । প্রতিষ্ঠানটি যাদের তথ্য নিয়েছে, তাদের অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। তবে এক কোটি ৬০ লাখ ব্যবহারকারী অন্য দেশের, যাদের মধ্যে প্রায় ১১ লাখ যুক্তরাজ্যে থাকেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’ নামের একটি কুইজ অ্যাপের মাধ্যমে এই তথ্য ফাঁস সম্ভব হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল ফেসবুক। ওই অ্যাপের মাধ্যমে কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি। সেই তথ্য পরে ব্যবহার করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের কাজে। এ কাজের সঙ্গে জড়িত এক অধ্যাপক সম্প্রতি মুখ খোলায় প্রকাশ্যে আসে সবকিছু। ফেসবুক ধারণা করছে, ৩ লাখেরও বেশি মানুষ এই অ্যাপটি ব্যবহার করেছেন। আগে বলা হয়েছিল এই সংখ্যা ২ লাখ ৭০ হাজার। অ্যাপ ব্যবহারকারীদের প্রায় ৯৭ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী।
এই কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক। কর্তৃপক্ষ জানতো যে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা লক্ষাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু লন্ডনভিত্তিক সংস্থাটি সেসময় দাবী করে যে তারা সেসব তথ্য মুছে দিয়েছে। এই বক্তব্যের উপর বিশ্বাস করে ফেসবুক।
এক সংবাদ সম্মেলনে জাকারবার্গ বলেন, আমাদের আরও অনেক কিছু করা উচিত ছিল, আমরা সেটি করব। জাকারবার্গ বলেন, তিনি আগে ভাবতেন, ফেসবুকের সুবিধাকে কীভাবে ব্যবহার করল, সেই দায় ব্যবহারকারীর ওপরই বর্তাবে। কিন্তু এখন ফেসবুকপ্রধানের ধারণা হয়েছে- তার সেই চিন্তায় সীমাবদ্ধতা ছিল। তিনি এখন বুঝতে পারছেন, ফেসবুককেও আরও দায়িত্ব নিতে হবে।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে তথ্য গেছে কি না, সে বিষয়ে ৯ এপ্রিল থেকে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নিউজফিডের ওপরে একটি নোটিশ দেখা যাবে। ফেসবুক তাঁদের প্রাইভেসি নীতিমালায় পরিবর্তন আনার ঘোষণাও দিয়েছে। নতুন নীতিমালায় ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করার বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। এ ছাড়া ফেসবুকের ঘটনা নিয়ে অভ্যন্তরীণ অডিট করার কথাও বলেছেন জাকারবার্গ।