বিস্ময়কর মনে হলেও, ঘটনা সত্য। এবার বাস্তবে মিলবে জেমস বন্ডের ‘উড়ন্ত গাড়ি’। প্রতিবছর জুলাইয়ের মধ্যবর্তী সময়ে ‘ফার্নবারো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারশো’র আয়োজন করে ব্রিটেন। এই এয়ারশো’তে বিভিন্ন দেশের তৈরিকৃত নতুন নতুন বিমান নিয়ে আসে কর্তৃপক্ষ। বিশ্বের উল্লেখযোগ্য বিমানগুলোই এখানে আনা হয়। তবে এই উল্লেখযোগ্য বিমানগুলোর মধ্যেও কিছু বিমান থাকে যেগুলো ‘অতি উল্লেখযোগ্য’। তেমনই একটি বিমান ‘লিবার্টি’।
ব্রিটেনে ‘ফার্নবারো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারশো’র একটি আয়োজনে এই গাড়িটি প্রদর্শন করা হয়েছে। প্রস্তুতকারক কোম্পানি এই গাড়িটিকে ২০২০ সাল নাগাদ বাজারে আনার চেষ্টা করছেন। আদতে এটি একটি বিমান। পাল-ভি কোম্পানি তাদের একটি ব্রশিয়ারে জানিয়েছে, গাড়িটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, চাইলেই এর চালক রাস্তায় স্বাভাবিক গাড়িগুলোর মতো চালাতে পারবে। আবার নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী বিমানের মতো আকাশ পথে উড়িয়ে নিতে পারবে।
বিবিসি জানিয়েছে, কিছুটা ছোট সাইজের বিমান লিবার্টির পাখাগুলো জেমস বন্ডের ০০৭ সিনেমার উড়ন্ত গাড়ির মতো। মাত্র ৯০ মিটার রানওয়েতেই গাড়িটি উড়তে ও অবতরণ করতে সক্ষম।
পাল ভি বলেছে, এই যানটি ব্যবহারকারীদের একই সঙ্গে আকাশে ওড়া ও মাটিতে সাধারণ কারের অনুভূতি দেবে। উড়ন্ত অবস্থায় গাড়িটি সর্বোচ্চ দুই জনকে ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার বেগে ৪০০-৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারে। এটি নামার পর ১০ মিনিটের মধ্যে পুনরায় গাড়ির মুডে চলে আসতে পারে।
বিবিসি জানিয়েছে, গাড়িটি পেট্রোলে চলে, তাই সহজেই জ্বালানি সরবরাহ করা সম্ভব। তাছাড়া গাড়িটির ইঞ্জিন ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনাও কম। কারণ এর দুটি ইঞ্জিনই একে অপরের বিপরীতে কাজ করে। এর পাশাপাশি উড়ন্ত গাড়িটিতে সেফটি মুডও রয়েছে।
টাইলেন নামে পাল-ভি কোম্পানির এক পাইলটের বরাত দিয়ে বিবিসি আরও জানায়, উড়ন্ত এই গাড়িটি বিমানবন্দর বাদেও যেকোনো রানওয়েতে অবতরণ করা সম্ভব। ইচ্ছা হলে এটা সমুদ্রের কিনারা থেকে শুরু করে ফাঁকা কোনো মাঠেও অবতরণ করানো সম্ভব। এর জন্য শুধু ৯০ মিটার রানওয়ে প্রয়োজন। তবে এটি নিজের করে পেতে হলে একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই ৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার ব্যয় করতে হবে।
বিশ্বে প্রথম ‘উড়ন্ত গাড়ি’ হিসেবে এটি পরিচিতি পেলেও টেলিভিশন পর্দায় দর্শক এর উপস্থিতি দেখেছে অনেক আগেই। ১৯৩৪ সালে প্রথম ‘ইট হ্যাপেন্ড ওয়ান নাইট’ সিনেমায় এবং ১৯৬৭ সালে জেমস বন্ড সিরিজের মুভি ‘ইউ অনলি লিভ টুয়াইস’ সিনেমায় এমন উড়ন্ত গাড়ির দেখা যায়। তবে ১৯৩১ সালে মার্কিন বিমানচালকদের অগ্রদূত এবং লেখক অ্যামিলিয়া ইয়ারহার্ট প্রথম এমন ধারণা দিয়েছিলেন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি