সরকার, নাগরিক সংগঠন এবং নাগরিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই কেবল বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। আজ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীতে দিনব্যাপী এক ফোরামে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে, বাংলাদেশ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অংশীদারত্বে এবং বাংলাদেশ ব্রিটিশ কাউন্সিলের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত প্লাটফর্মস ফর ডায়ালগ (Platforms for Dialogue) -পিফরডি প্রকল্পের অংশ হিসেবে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশাসন এবং সামাজিক জবাবদিহিতা (IGSA) ফোরাম’টি আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। যেকোনো প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহিতার গুরুত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নাগরিকদের উপকারে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশাসনের ব্যাপারে পিফরডি নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তা উভয়ের ভূমিকা সমন্বয়ের লক্ষ্য নিয়েছে।”
সরকারের বাংলাদেশের উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও দায়বদ্ধতার সাথে অংশগ্রহণ প্রয়োজন। আজকের কর্মশালার শিরোনাম অনুযায়ী সরকারের সংলাপে অংশগ্রহণ করা উচিৎ বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ডেলিগেশন প্রধান ও রাষ্ট্রদূত রেন্সজি টিরিংক।
সামাজিক জবাবদিহি নীতিমালার প্রয়োগ নিশ্চিতকরণে পিফরডি-এর কার্যক্রমে গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশ ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালক বারবারা উইকহ্যাম বলেন, ‘পিফরডি-এর অন্যতম উদ্দেশ্য সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় উল্লিখিত লক্ষ্যগুলোর পাশাপাশি জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, তথ্য অধিকার আইন, অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা ও নাগরিক সনদ কেন্দ্রিক নীতিমালা বাস্তবায়নে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা প্রদান করা।
দিনব্যাপী ফোরামটিতে ছিলো সামষ্টিক আলোচনা, বিষয়ভিত্তিক সেশন ও কর্মশালা। এ সেশনগুলোয় প্রধানত জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে নাগরিক সংশ্লিষ্টতা ও সেবার মান তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের চাহিদা প্রসঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি নাগরিক সনদ ও অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার কার্যকরী প্রয়োগ সংক্রান্ত জ্ঞান ও দক্ষতায় জোর দেয়া হয়।
স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে তিন বছরমেয়াদী প্রকল্প পিফরডি। প্রকল্পে সরকার ও নাগরিক সমাজের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্কের উন্নয়নে পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
জেলাপর্যায়ে নাগরিক সমাজ ও স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করছে পিফোরডি। কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে ২১টি জেলায়, এলাকাভিত্তিক প্রশাসনিক ইস্যু নিয়ে স্থানীয় নাগরিক সংগঠন (CSO) ও স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের মিথস্ক্রিয়া ও মতবিনিময় বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি নীতিমালা বিষয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নতুন মতবিনিময়ের
ক্ষেত্র গড়ে তোলা হচ্ছে যেগুলো সরকার ও নাগরিকের মধ্যে কার্যকর ও স্বচ্ছ আদানপ্রদান নিশ্চিতকরণে কাজ করবে।