সরকারের সফলতার সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের চার বছরের সফলতা উদযাপন করছে সরকার। কি জনগণের চাওয়া পাওয়ার কি হিসাব মিলেছে?
কিছু স্বপ্ন হয়তো পূরণের পথে। আইটি খাতে ৫ বিলিয়ন রপ্তানি, হাই টেক পার্ক, দক্ষতা-প্রশিক্ষণ, ফাইবার কেবল, ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেে অগ্রগতি আছে। কিন্তু একেবারে মূল চাহিদা মোবাইল ইন্টারনেটের খরচ আর গতির সমস্যা রয়েই গেছে। গ্রামাঞ্চলে গেলে এটি চোখে পড়বে। ফ্রিল্যান্সারদের চাওয়া পেপ্যাল পূর্ণরূপে আসুক, তা এখনো আসেনি। কিন্তু কিছু অপূর্ণতা আছে সত্যি। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের পথে একধাপ এগোনোটাই কম কিসে?
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, দেশের সকল ইউনিয়নে হাইস্পিড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগের মাধ্যমে যুক্ত করে জনগণকে ফ্রি ওয়াইফাই দেবে সরকার। ইনফো সরকার ৩ প্রকল্পের মাধ্যমে এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ার মিলনায়তনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্ত বিভাগের এগিয়ে যাওয়ার আরও চার বছর উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী।
পলক বলেন, দেশের অর্ধেক মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ২০২১ সালের মধ্যে সরকার শতভাগ মানুষকে ইন্টারনেটের আওতায় আনতে চায়। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার।
পলক আরও বলেন, আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে ২০২১ সালের মধ্যে ব্রডব্যান্ডের মাধ্যমে হাইস্পিড ইন্টারনেট কানেকটিভিটি ৫০ শতাংশে উন্নীত করা। বর্তমানে সরকারি সেবার ৫০ শতাংশ এখন ই-গর্ভনেসের আওতায় এসেছে। আমরা সরকারের এই সেবাকে ২০২১ সাল নাগাদ ৯০ শতাংশে নিয়ে চাই। ই-গর্ভনেন্সর পাশাপাশি আমরা এম-গর্ভনেন্স নিয়ে কাজ করছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইসিটি বিভাগ পরিকল্পনা নিয়েছে এখাতে আগামী তিন বছরে ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে। এজন্য লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই প্রকল্প থেকে ১৩ হাজার তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। যাদের মধ্যে ১০ হাজার তরুণ-তরুণী অনলাইন মার্কেটপ্লেসে আউটসোর্সিং করে ৬ লাখ ডলারেরও বেশি আয় করেছে।
দেশের সকল তরুণকে আইসিটি প্রশিক্ষণ নেয়ার তাগিদ দিয়ে পলক বলেন, এ বছর সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ৪০ হাজার তরুণকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এদের মধ্য থেকে ৪ হাজার নারীকে ফ্রিল্যান্সার ও এন্টারপ্রেনার হিসেবে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা হবে। যারা জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে থেকে কাজ করবে। এদেরকে ৯ মাসের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ইন্টার্নশিপের সুযোগ দিয়ে ল্যাপটপ কেনার জন্য ২০ হাজার টাকা দেয়া হবে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ শিক্ষার ডিজিটালাইজেশনে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষা প্রাইমারি স্কুলেও যুক্ত করার। এছাড়াও শিশু-কিশোরদের প্রোগ্রামিং শেখানোর জন্য এ বছর প্রাইমারি স্কুল পর্যায়ে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।
পলক জানান, দেশের আরও ৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। এছাড়াও আগামীতে সরকার, স্মার্ট সিটি, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কাউন্সিল, জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সি, ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব এবং শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফিউচার টেকনোলজি প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে পলক পেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিগত চার বছরে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অগ্রগতি এবং আগামীতে কী কী তথ্যপ্রযুক্তি বান্ধব নীতিমালা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সে সম্পর্কে তথ্যচিত্র তুলে ধরেন।