১৫ থেকে ১৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে ওয়ারলেস টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন, হংকং কর্তৃক আয়োজন করা হয় এশিয়া স্মার্ট ইনভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২৫। হংকং আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের স্টার্টআপ দেশসেরা প্রতিষ্ঠানসমূহ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে।
এ আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো এশিয়া জুড়ে উদ্ভাবনী, স্মার্ট এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর উদ্যোগগুলোকে স্বীকৃতি দেয়া, আঞ্চলিক স্টার্টআপ ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসমূহকে তাদের কাজ প্রদর্শনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ব্যবসায়িক সম্প্রসারণে সহায়তা করা। এই উদ্যোগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস, ব্লকচেইন, এআর/ভিআরসহ পরবর্তী প্রজন্মের ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণে উৎসাহ প্রদান করে।
বেসিস প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ্ খান এই অনুষ্ঠানে বিচারক ও বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি ফাইনাল জাজিং, অর্গানাইজেশন ভিজিট, সামিট এবং অ্যাওয়ার্ড প্রদানসহ বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণ করেন। বেসিসের পক্ষ থেকে তাঁর অংশগ্রহণ বাংলাদেশের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে ক্রমবর্ধমান ভূমিকা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রযুক্তিগত ইকোসিস্টেমে দেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে।
এবারের এশিয়া স্মার্ট ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডসে তিনটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়, ক্যাটাগরিগুলো হচ্ছে — পাবলিক সেক্টর অ্যান্ড সোশ্যাল ইনোভেশন, বিজনেস অ্যান্ড কমার্শিয়াল, এবং লাইফস্টাইল অ্যান্ড কালচার। বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, ইসরায়েল, মালয়েশিয়া, কোরিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও হংকংসহ বিভিন্ন দেশের মোট নয়টি ফাইনালিস্ট এই পুরস্কারের জন্য প্রতিযোগিতা করে।
এবারের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ হতে বেসিসের অন্যতম সদস্য-১১টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে, যা বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের উদ্ভাবনী সক্ষমতা ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার প্রমাণ বহন করে। এর মধ্যে ‘কাজ সফটওয়্যার লিমিটেড’ “লাইফস্টাইল অ্যান্ড কালচার” ক্যাটাগরিতে চূড়ান্ত প্রদর্শনের জন্য মনোনীত হন এবং উক্ত ক্যাটাগরিতে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে দেশকে গৌরবান্বিত করেছে। কোম্পানির সিইও ওয়াহিদ আজিজ চৌধুরীর হাতে পুরস্কারটি তুলে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ হতে এ প্রতিযোগিতায় রিজিওনাল কো-অর্গানাইজার হিসেবে বেসিসের প্রশাসক দায়িত্ব পালন করেন এবং বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলোকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ উপস্থাপন ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এ আয়োজনে সামিট ও নেটওয়ার্কিং সেশনে প্রযুক্তি খাতের নেতৃবৃন্দ, বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করেন, যা সম্ভাব্য ব্যবসায়িক সহযোগিতা ও ধারণা বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি করে।
গোল্ড অ্যাওয়ার্ড পাওয়া কাজ সফটওয়্যার লিমিটেড-এর সিইও ওয়াহিদ আজিজ চৌধুরী বলেন, “এশিয়া স্মার্ট ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডসে গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন আমার প্রতিষ্ঠানের জন্য গর্বের এবং বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য অনেক বড় অর্জন। তিনি আরও বলেন, বেসিসের নবনিযুক্ত প্রশাসক জনাব আবুল খায়ের মুহাম্মদ হাফিজুল্লাহ্ খানের সমর্থন আমাকে যথেষ্ট অনুপ্রাণিত করেছে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিভা প্রদর্শনে সাহস যুগিয়েছে।”
এ প্রসঙ্গে বেসিসের নবনিযুক্ত প্রশাসক আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ্ খান বলেন, “এশিয়া স্মার্ট ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডসে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, আমাদের দেশ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে এশিয়ার শীর্ষ সারিতে পৌছাতে সক্ষম হয়েছে।” বেসিসের সাথে সম্পৃক্ত তথ্যপ্রযুক্তিখাতের প্রতিষ্ঠানগুলো আগামীতে বৈশ্বিক মঞ্চে আরও দৃঢ়ভাবে নিজেদেরকে উপস্থাপন করবে এবং স্মার্ট ইনোভেশনের মাধ্যমে দেশকে জ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বেসিস বিশ্বাস করে, এশিয়া স্মার্ট ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫-এ বাংলাদেশের এই সাফল্য দেশের আইসিটি খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি উদ্ভাবনী প্রযুক্তি সমাধান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
