এক হাজার টাকার নোট বাতিল হবে বলে গুজব ছড়িয়েছে। এর আগে ভারতে নোটবন্দী কর ২০০০ রুপির নোট বাতিল করা হয়। বাংলাদেশের দুর্নীতি ও অর্থপাচার ঠেকাতে এরকম কোনো ঘটনা কি ঘটবে? মানুষের মনে আতংক।
তবে ১০০০ টাকার নোট বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকে বোর্ড মিটিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১০০০ টাকার নোট বাতিলের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, কিন্তু নোট বাতিলের এমন কোনো সিদ্ধান্ত আপাতত নেই।
বঙ্গবন্ধুর ছবি বাদ দেওয়া ও নতুন গভর্নরের সই করা নোট শিগগিরই আসবে কি না, এ বিষয়ে গভর্নর বলেন, যখন টাকশালে নোট বানানোর প্রয়োজন হবে তখন নোট ছাপানো হবে, সই যাবে।
১ হাজার টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত সহজে নেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
সহজে এক হাজার টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না বলে মনে করেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এ নিয়ে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছুই বলা ঠিক নয়। এটা থাক। এতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ও কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকলসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা।
এ নিয়ে গুজব আছে কি না জানতে চাইলে সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমার দিক থেকে কিছু বলিনি। সুতরাং, গুজব কি না আমি মন্তব্য করব না। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাপার।’
আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া ১৮ লাখ কোটি টাকা ঋণের বোঝা কীভাবে কমাবেন, তা জানতে চাইলে সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এটা বড় চাপ। প্রচণ্ড চাপ।
উন্নয়ন সহযোগীদেরও বলতে হবে যে এটা বড় চাপ। আমরা এগুলো পর্যালোচনা করছি। সতর্ক আছি। নিজেদের মধ্যেও এ নিয়ে কথা হচ্ছে। এত বড় ঋণের বোঝা নিয়ে শুরু করেছি, আমাদের জন্য খুব কঠিন। ঋণ ফেরত দেওয়ার বিষয় আছে। এগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করব।’
আগের সরকার কিছু সমস্যা তৈরি করে রেখেছে অভিযোগ করে উপদেষ্ট বলেন, ‘অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যেগুলো না নিলেও চলত। আমাদের ওপর ঋণের বোঝা পড়েছে। এগুলো দুঃখজনক।’
চীন থেকে নেওয়া ঋণের সুদহার কমানো ও পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘দুই রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয়গুলো চলমান থাকবে। অনুরোধ করেছি যেন তাঁরা কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা চালিয়ে নিয়ে যান। তাঁরা নিশ্চিত করেছেন, এ ক্ষেত্রে সাধারণত যতটুকু সহায়তা করা হয়, তার চেয়ে বেশি করা হবে।’
উচ্চ সুদে নেওয়া চীনা ঋণের বিষয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সুদের হার নিয়ে কথা বলেছি। তিনি (রাষ্ট্রদূত) বলেছেন দেখবেন। ঋণ পরিশোধের (রি-পেমেন্ট) সময়সীমা আরও ১০ বছর বাড়ানোর জন্য বলেছি।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচলিত ১ হাজার টাকার নোট বাতিলের গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এমনকি এক পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়, ‘এক হাজার টাকা মূল্যমানের নোট বাতিলের যে তথ্য ছড়িয়েছে, তা গুজব।’
এ বিষয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এক হাজার টাকার নোট বাতিলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।