প্রযুক্তির সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা জোরদারে বিশ্বে প্রতিনিয়ত বাড়ছে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার। ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ক্ষুদ্র আকারের ডাটা সেন্টারের পরিবর্তে বিশ্বব্যাপী সমৃদ্ধ হচ্ছে ক্লাউড সিস্টেম। নিজেদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির পাশপাশি বিলিয়ন ডলারের বাজার ধরতে দেশীয় ক্লাউড সেবায় গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিষ্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) এর উদ্যোগে ও প্লেক্সাস ক্লাউডের সহযোগিতায় আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক অডিটোরিয়ামে ‘দ্য ফিউচার অব ক্লাউড কম্পিউটিং শীর্ষক কর্মশালায় এ আহ্বান জানানো হয়। কর্মশালায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বিআইজেএফ সভাপতি মোজাহেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হাসান জাকির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, আইসিটি খাতে বাংলাদেশ ভালো করছে। তবে সেটি দারুনভাবে হচ্ছে এটি বলা যাবে না। আমরা বিদেশিদের যতটা কদর করি সেই তুলনায় দেশের তরুণরা সুযোগ পায় না। এদিকে নজর রাখতে হবে। তিনি কর্মশালা আয়োজনের জন্য বিআইজেএফকে ধন্যবাদ জানান।
কর্মশালাটি পরিচালনা করেন ওপেনসোর্স ভিত্তিক ক্লাউড কম্পিউটিং বিশেষজ্ঞ এবং প্লেক্সাসের প্রধান নির্বাহী মোবারক হোসাইন। মোবারক হোসেন বলেন, ২০২২ সালে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের বাজার হবে ৩৩১ বিলিয়ন ডলার। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ খাতে আমাদেরও সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগ আমাদের গ্রহণ করতে হবে।
কর্মশালায় মোবারক হোসাইন ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের উপর তার দীর্ঘদিনের গবেষণার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, ‘সমগ্র বিশ্বের আইসিটি সেক্টর ক্রমান্বয়ে ক্লাউডের উপর নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এর পরিধি আরো ব্যপকহারে বৃদ্ধি পাবে। এতে করে ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ক্ষুদ্র আকারের ডাটা সেন্টারের ব্যবহার কমে আসবে। ফলে গ্রাহকের হার্ডওয়্যারের খরচ কমে যাবে। ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমে পাবলিক ক্লাউড, প্রাইভেট ক্লাউড অথবা হাইব্রিড ক্লাউড তৈরীর মাধ্যমে আইসিটি সেবাগুলো এক ক্লাউড থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
কর্মশালায় দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমে কর্মরত বিআইজেএফের প্রায় ৫০ সদস্য অংশ নেয়। কর্মশালা শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের সনদপত্র দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিআইজেএফে যুক্ত হওয়া নতুন ১৯ সদস্যকে আনুষ্ঠানিক বরণ করে নেওয়া হয়। এ পর্বে বিআইজেএফ কার্যনির্বাহী সদস্য ছাড়াও সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সদস্য ভূইয়া ইনাম লেনিন, সুমন ইসলাম, হিটলার এ হালিম, মো. নাসির উদ্দিন নতুন সদস্যদের হাতে সদস্যপদের চিঠি হস্তান্তর করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ওপেনসোর্স ক্লাউডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হার্ডওয়্যার ভেন্ডরের উপরে গ্রাহকদের কোন নির্ভরশীলতা থাকে না। মুক্ত অবকাঠামো হওয়ার কারনে বাজারে পাওয়া যায় এমন হার্ডওয়্যারভ ব্যবহার করেই ক্লাউড অব কাঠামো তৈরী করা সম্ভব। এইক্লাউড তৈরীর মাধ্যমে প্রচলিত কম্পিউটারের মেমরী, প্রসেসর, স্টোরেজ একত্রিত করে একটি ক্লাউড রিসোর্স তৈরী করা যায়। এই রকম একটি ক্লাউডে ৬৪,০০০ কম্পিউটার নোড সংযুক্ত করা সম্ভব। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশে ই-সুপার কম্পিউটার বানানোও সম্ভব। তাই বাংলাদেশে এখনই উপযুক্ত সময় রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারী খাতে ওপেন সোর্স ভিত্তিক ক্লাউড প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজস্ব ক্লাউড তৈরী করা।