রাজধানীর জিপি হাউজে গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটর ৩.০ এর ‘ডেমো ডে’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে জিপি অ্যাকসেলেরেটর সপ্তম ব্যাচ। জাতীয়ভাবে পুরস্কার প্রাপ্ত গ্রামীণফোন অ্যাকসেলেরেটর ২০১৫ সাল থেকে দেশীয় স্টার্টআপগুলোর বিকাশ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছে। জিপিএ ৩.০ এর ছয়টি অংশগ্রহণকারী স্টার্টআপের জন্য এই ডেমো ডে অনুষ্ঠিত হয়; যেখানে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সামনে অংশ নেয়া স্টার্টআপগুলো তাদের আইডিয়াগুলো তুলে ধরে। ডেমো ডে’তে অংশগ্রহণকারী, বিনিয়োগকারী ও অতিথিদের উপস্থিতিতে পিচ প্রক্রিয়া ও প্রশ্ন-উত্তর সেশন নিয়ে উপভোগ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এক্সিকিউটিভ মেম্বার মোহসিনা ইয়াসমিন। ডেমো ডে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, সিসিএও হ্যান্স মার্টিন হেনরিক্সন, হেড অব সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ফারহানা ইসলাম এবং প্রতিষ্ঠানটির হেড অব কমিউনিকেশন্স খায়রুল বাশার। এছাড়াও, অনুষ্ঠানে সিইও মুস্তাফিজুর খান সহ অন্যান্য সম্মানিত কর্মকর্তা ও বিনিয়োগকারী ও অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া ছয়টি স্টার্টআপ হলো: আইপেজ, এয়ারওয়ার্ক, লাইলাক, অন্য, ওয়ানথ্রেড ও গেম অব ইলেভেন।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, “আমাদের তারুণ্যের অদম্য শক্তি আগামীতে বাংলাদেশের আরও উন্নত ভবিষৎ গড়ে তুলবে বলে আমি বিশ্বাস করি। নতুন উদ্ভাবন, আইডিয়া দিয়ে আমাদের তরুণরাই আগামী’র সম্ভাবনা উম্মোচনের নেতৃত্ব দিবে। উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক আইডিয়াকে বাস্তবে রুপ দিয়ে আমরা সামনের দিকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। গ্রামীণফোন সবসময়ই তরুণ নিয়ে কাজ করতে গর্ব বোধ করে এবং আমরা স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো। তরুণদের ক্ষমতায়নের অগ্রযাত্রায় অংশ হতে পেরে আমরা সত্যিই গবির্ত। আমরা মনে করি এসব উদ্যোগই আমাদের টেকসই জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে আপস্কিল এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মুস্তাফিজুর খান বলেন, “আজকের অনুষ্ঠানের মূল বিষয় ছিলো উদ্ভাবন, এটি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ব্যবসায়ী নেতা এবং উদ্যোক্তারা সঠিক পথে রয়েছে সে বিষয়টিকে প্রমাণ করে। আমি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া সকল অংশগ্রহণকারীদের কঠোর পরিশ্রম ও নিবেদন দেখানোর জন্য ধন্যবাদ জানাই। তারা যদি এ ধরনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখে তাহলে আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশের বাজারে বৈশ্বিক মানদণ্ডের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তৈরি হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
আইপেজ একটি অ্যাগ্রিটেক স্টার্টআপ, যারা ডেটা, মেশিন লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ক্ষুদ্র কৃষকদের বৃহত্তর ভ্যালু চেইনের সাথে যুক্ত করতে সাহায্য করে। এ স্টার্টআপটি বাজারের চাহিদা, মূলধন, বিমা এবং মেকানাইজেশনের (যান্ত্রিকীকরণ) তথ্য ও পরামর্শ প্রদানের জন্য ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য একটি ডিজিটাল সিস্টেম চালু করেছে। অন্যদিকে, এয়ারওয়ার্ক বাংলাদেশি প্রযুক্তি খাতের মেধাবীদের বিশ্ববাজারে যুক্ত করতে কাজ করছে। দেশ ও বিদেশের বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এ প্ল্যাটফর্ম থেকে নির্বাচিত পেশাদার প্রযুক্তিবিদ খুঁজে পেতে পারে। লাইলাক বাংলাদেশের প্রথম সুস্থতা বিষয়ক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। এ প্ল্যাটফর্ম নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে। ২০২১ সালে এটি যাত্রা শুরু করে, যা নারীদের মাসিক সংক্রান্ত সমস্যাগুলো আরো ভালোভাবে সমাধান করার জন্য একটি সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক পিরিয়ড কেয়ার সেবা দিয়ে থাকে।
“অন্য” একটি ইন্টারনেট রেস্টুরেন্ট প্ল্যাটফর্ম। অন্য’র যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশের ছোট রেস্তোরাঁকে প্রযুক্তি, ডিজিটাল বিপণন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং সাশ্রয়ী খাদ্য তৈরির পদ্ধতিতে সাহায্য করার লক্ষ্য নিয়ে। ওয়ানথ্রেড একটি বাংলাদেশি প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এসএএএস (সফটওয়্যার-অ্যাজ-আ সার্ভিস)। এটি এজেন্সি, স্টার্টআপ এবং অনলাইন ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ কাজগুলো পরিচালনা করতে এবং নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। গেম অব ইলেভেন হল একটি ফ্যান্টাসি স্পোর্টস প্ল্যাটফর্ম, যারা বাংলাদেশের ২ কোটিরও বেশি গ্লোবাল ফ্যান্টাসি স্পোর্টস ব্যবহারকারীকে একটি স্থানীয় প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ করছে।
জিপিএ ৩.০ এর জন্য গ্রামীণফোন তিনটি কনসোর্টিয়াম পার্টনার এর সহযোগী হয়েছে- এগুলো হলো: বেটারস্টোরিজ লিমিটেড, লাইট ক্যাসেল পার্টনার্স ও আপস্কিল। বর্তমান ব্যাচের স্টার্টআপগুলো গ্রামীণফোনের ‘গ্লোবাল-ফার্স্ট’ নীতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে, যা তাদের দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বাইরেও নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান তৈরিতে সাহায্য করবে।