প্রযুক্তি ব্যবহারে সমাজে সচেতনতা তৈরি, আচরণগত পরিবর্তন ও সুরক্ষার সংস্কৃতি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীতে আয়োজিত ‘সাইবার আড্ডা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন।
কাকরাইলে অডিট ভবনে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিল প্রযুক্তিবিদদের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইসাকা ঢাকা চ্যাপ্টার ও প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সাইবার প্যারাডাইজ। এতে কি-নোট প্রেসেন্টেশন দেন ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা একেএম নজরুল হায়দার।
প্যানেল আলোচক ছিলেন ইনফরমেশন সিস্টেম অডিট অ্যান্ড কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (আইসাকা) ঢাকা চ্যাপ্টার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সোনালী ব্যাংকের চিফ টেকনিক্যাল অফিসার ওমর ফারুক খন্দকার, ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাশেদা রওনক খান।
নজরুল হায়দার তার আলোচনায় দেশ বিদেশে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণ করে বলেন, সাইবার সুরক্ষার জন্য তিনটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোকে এককথায় বলা হয় ‘এবিসি অব সাইবার সিকিউরিটি’। অ্যাওয়ারনেস বা সচেতনতা, বিহেভিয়ার বা প্রযুক্তি ব্যবহারের আচরণগত পরিবর্তন ও কালচার বা প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতনতার সংস্কৃতি গড়ে তোলা। সচেতনতার মাধ্যমে অন্তত ৫০ ভাগ সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
ইকবাল হোসেন বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতন না হলে আমরা নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত হবো, অন্যদেরও ক্ষতির কারণ হবো। ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফি প্রদর্শনসহ প্রযুক্তি ব্যবহারের কিছু বিষয়ে সরকারি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব এবং তা থাকা উচিত বলে তিনি মত দেন।
ওমর ফারুক খন্দকার বলেন, শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহার করতে দেয়া উচিত নয়। প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া উচিত। বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহারের সময় বয়সভেদে সুযোগ-সুবিধাগুলো নিয়ন্ত্রণের সুযোগ রয়েছে। সেগুলো সবাইর জানা উচিত।
সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, সাইবার নিরাপত্তার বিষয়গুলো মূলত চার ভাগে বিভক্ত। প্রথমে প্রযুক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়গুলো বাস্তবায়ন, এরপর নিয়মিত তদারকি, ঝুঁকি নিরূপণ ও সুরক্ষার জন্য উন্নয়নমূলক ব্যবস্থা।
রাশেদা রওনক খান বলেন, যতো দ্রুত আমরা প্রযুক্তিতে আগাচ্ছি ততোটা সুরক্ষার পথ আছে কিনা সেটা দেখতে হবে। কোন তথ্য আমি সবার সঙ্গে শেয়ার করবো, কোন তথ্য বন্ধুদের সঙ্গে এবং কোনটি একদম কারো সঙ্গে শেয়ার করার বিষয় নয়, তা আমাদের বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও আহ্বায়ক কাজী মুস্তাফিজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব আবদুল্লাহ হাসান। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আগত ব্যক্তিবর্গ আলোচনায় অংশ নেন।
‘সাইবার আড্ডা’ আগামীতে প্রতি মাসে বিষয়ভিত্তিক আয়োজন করা হবে বলে জানান আয়োজকরা।