ব্যাগে বা কোন বক্সে যদি কোনধরনের অস্ত্র, বোমা বা বিস্ফোরক থাকে তবে তা ধরিয়ে দিতে পারবে পাবলিক ওয়াইফাই। ওয়াইফাই এর সিগনাল দিয়েই অস্ত্র ও বিস্ফোরকের মত বিপজ্জনক বস্তু সনাক্ত করার এক প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে একদল গবেষক। গবেষকদের দাবি, খোলামেলা পাবলিক জায়গাগুলোতে সাধারণ ওয়াইফাই দিয়েই সনাক্ত করা যাবে অস্ত্র, বিস্ফোরক এবং তরল বিস্ফোরকের মতো বস্তু। ব্যাগের ভেতরে থাকলেও সেগুলো সনাক্ত করা সম্ভব বলেও দাবি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির রুটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, কোন ব্যাগের দেয়াল ভেদ করে ভেতরে থাকা ধাতব বস্তু বা তরল পদার্থ সনাক্ত করতে পারবে। পাশাপাশি সেগুলোর আকার ও আয়তনও বলে দিতে পারবে ওয়াইফাই সিগনাল। গড়ে অন্তত ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ওয়াইফাই সিগনাল সঠিক তথ্য দেয় বলে জানায় তারা। পরে অবশ্য পরীক্ষার মাধ্যমে তা দেখানো হয়েছে। এই পদ্ধতির ব্যবহার করে এয়ারপোর্টের মতো স্থানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষক দলটি ১৫টি বস্তুর উপর এমন পরীক্ষা চালিয়েছে। যেখানে ছয় ধরনের ব্যাগ রয়েছে। এমন পাবলিক ওয়াইফাই সিস্টেমে ভয়ংকর সব অস্ত্র, বোমা ধরায় এটির সফলতার পরিমাণ ৯৯ শতাংশ। যেখানে ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রে ধাতব ও ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে তরণ বিস্ফোরক ধরতে সক্ষম। এ জন্য অবশ্য দরকার তিন থেকে চার অ্যান্টেনা বিশিষ্ট ওয়াইফাই রাউটার।
যাদের ব্যাগে এমন কোন পদার্থ থাকবে সঙ্গে সঙ্গে সেটি ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে নির্দিষ্ট একটি মাধ্যমে সিগনাল দেবে। গবেষকরা জানান, রাউটারের মাধ্যমে তার রেঞ্জের মধ্যে থাকলে তা সনাক্ত করতে পারবে। তবে এর জন্য কিছু কর্মী দরকার ওই ব্যাগ বা বক্সগুলো অপসারণ করতে। মূলত ওয়াইফাই এটা নিশ্চিত করবে যে এখানে কোন ধাতব বা তরল বিস্ফোরক রয়েছে।
গবেষক দলের সদস্য অধ্যাপক ইংগিং চেন বলেন, “বড় পাবলিক জায়গাগুলোতে, বড় ধরণের নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি স্থাপন করা খরচের ব্যাপার। এছাড়াও ব্যাগ তল্লাশীর জন্য মানুষ দরকার। আমরা মানুষের পাশাপাশি বিকল্প আরেকটি ব্যবস্থা তৈরির চিন্তা করছি”।“বিপদ থেকে সাধারণ মানুষদের রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে এই ব্যবস্থা। দিন দিন এর দরকার আরও বাড়বে”-বলেন ইংগিং।
খুবই কম খরচে তৈরি করা যাবে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দরকার হবে দুই বা তিন অ্যান্টিনা বিশিষ্ট ওয়াইফাই ডিভাইস। জাদুঘর, স্টেডিয়াম, থিম পার্ক, স্কুলের মতো পাবলিক জায়গাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে এর মাধ্যমে। মানুষের ওপর নির্ভরশীলতা অনেকখানি কমিয়ে দেবে এই ব্যবস্থা।
তথ্যসূত্র: বিবিসি