সফটওয়্যার খাতে লেটেস্ট সব প্রযুক্তি চলে এসেছে। সারা বাংলাদেশের সমস্ত অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে শুরু করে অফিস ম্যানেজমেন্ট করা যায় একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে। যেটি ব্যবহার করলে কাগজের কোনো প্রয়োজন হবে না। হবে সময় সাশ্রয়ী এবং প্রযুক্তির সৎব্যবহার।
বাংলাদেশের উদ্যেক্তা ও একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা সফটওয়্যার ডিজাইনার মান্না মাহমুদ, যিনি ইউরোপের বিভিন্ন সরকারি ও জাতীয় প্রতিষ্ঠানে মুল সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট হিসেবে সফলতার সহিত দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এমন একটি বিজনেস সফটওয়্যার তৈরি করেছেন যেটি দিয়ে নিজের মত করে অফিস, এনজিও, বিজনেস প্রতিষ্ঠানসহ বড় বড় কোম্পানির সারা দেশের সকল কর্মীদের ডাটা এবং কাজের অগ্রগতি রিয়েল টাইম পর্যবেক্ষণ ও অনুমোদন করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ব্রাঞ্চ, বিভাগ, দপ্তর এর কার্য পদ্ধতি ও তথ্য ফর্ম নিজেদের মত করে বানানো সম্ভব অল্প সময়েই। এজন্য একটি স্মার্টফোন থাকলেই হবে। কোনো ভারি ভারি হার্ডওয়্যার বা প্রযুক্তির অনেক কিছু জানতে হবে বিষয়টি এমনও নয়। সফওয়্যারটির নাম ‘ক্লাউড অফিস ডিজিটাল ওয়ার্কপ্লেস’। এর মূল কোম্পানি ক্লাউড অফিস।
ভ্রম্যমান কর্মী ব্যবস্থাপনা
এ সম্পর্কে মান্না মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশের মানুষ সফটওয়্যার কিনতে গেলে অনেক ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়। যখন কোনো বড় ব্যবসায়ী মনে করেন সফটওয়্যার কিনবে, দেখা যায় বিদেশ থেকে লোক আসে, বাস্তবায়ন হতে লেগে যায় বছরের পর বছর, দেখা যায় অনেক সমস্যা। সে নিজে অনেক কিছুই বুঝতে পারে না। এবং সফটওয়্যার এর জন্য অনেকে ব্যবসার ধরনও বদলাতে বাধ্য হয়। এক সময় সেটা বোঝায় পরিনত হয়। তাছাড়া প্রয়োজন হয় সফটওয়্যারটির সাথে হার্ডওয়্যারও। যেগুলো কেনা ও রক্ষনাবেক্ষন রাখা ব্যয়সাপেক্ষ হয়। কিন্তু সহজেই একটা মোবাইল ডিভাইস দিয়ে সব কিছু ম্যানেজ করা সম্ভব আমাদের বিজনেস সফটওয়্যারটি দিয়ে।
অটোমেশনে বিভিন্ন বড় কোম্পানির প্রধান হিসেবে কাজ করেছি, তখন থেকে যেটা বুঝেছি, বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাদের সফটওয়্যারের জটিলতার কারণে প্রযুক্তির অনেক সুবিধাই তাড়াতাড়ি নিতে পারে না, বলে জানান তিনি।
মান্না বলেন, মনে করেন যে আইটিতে একটু কম পারদর্শী, সে ও চায় খুব সহজে যাতে তার বিজনেস হ্যান্ডেল করতে পারে। তার অনেক কর্মী আছে, মাঠে পর্যায়ে কাজ করে। সে চায় খুব সহজেই যাতে তাদের ম্যানেজ করা যায়। সে চায়, মোবাইলে বসেই সব কিছু ম্যানেজ করা যাবে, এমন কিছু কি নাই? তাদের জন্যই আমাদের ক্লাউড অফিস ডিজিটাল ওয়ার্কপ্লেস।
আগের মত ভারি ভারি সফটওয়্যার কিনে সল্যিউশন দেওয়ার সেই প্রবণতা এখন কমে যাচ্ছে। এবং বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, এ সব ভারী ভারী সফটওয়্যার খুবই ব্যয় বহুল কিন্তু সেই তুলনায় কার্যকরিতা নাই। আমেরিকা সহ উন্নত দেশে এই ট্রেন্ড শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশ বুঝতে হয়তো একটু সময় লাগতে পারে। এটিকে বল হয়, ডিজিটাল ওয়ার্কপ্লেস প্লাটফরম -যেটা মোবিলিটি ম্যানেজ করতে সাহয্য করে।
কীভাবে কাজ করে এই সফটওয়্যার।
সহজে কীভাবে অফিস চালানোর সল্যিউশন দেওয়া যায় তা নিয়েই এই ক্লাউড অফিসের যাত্রা শুরু হয় বলে জানান মান্না। তিনি বলেন, এক পর্যায়ে আমরা দেখলাম, যে মানুষটি কম শিক্ষিত সেও জানে কীভাবে হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার ব্যবহার করতে হয়। এবার আমাদের চিন্তা হলো, এই ইন্টারফেসের ভিতরেই তাঁর বিজনেসের সব পদ্ধতি কিভাবে বুঝিয়ে দিতে পারি। তাঁর যাতে কারো কাছে যাওয়া না লাগে, যেটা আমাদের দেশের লোকজনের উপযোগী করে ‘ক্লাউড অফিস’-নামে আমরা তৈরি করেছি। হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার এর মুল সমস্যা হচ্ছে এগুলোতে অযথা কথা হয় এবং কাজের কথা পরে খুজে পেতে অনেক ঝামেলা হয় । এককথায় কাজের থেকে কথা বেশি। আমরা এই সমস্যা দূর করতে, গ্রুপে ডাটা ফর্ম তৈরি করার সুবিধা করে দিয়েছি এবং এই ডাটা ফর্ম কে দেখতে পারবে এবং কে অনুমোদন করতে পারবে তা নির্ধারণ করে দেয়ার সুবিধা যোগ করে দিয়েছি । এখান থেকে বের করা যাবে প্রয়োজন মত রিপোর্ট।
মনে করেন যারা ডিস্ট্রিবিউশন সেল করে, ডিলার যখন অর্ডার দিবে, ডিলার ভাইবারে একটা গ্রুপ করে কথা বলে, যা কিনা অফিসিয়াল না। এটা করার দরকার নেই। পারচেজ অর্ডার গ্রুপ তৈরি করে -> সে তখন ওইখান থেকে অর্ডার দিতে পারবে নির্দিষ্ট ফরমে -> এটা চলে যাবে সেলস ডিপার্টমেন্টের কাছে, সে অনুমোদন দিলে -> তার পর মজুদ পর্যবেক্ষকের কাছে, সে অনুমোদন দিলে-> তার পর অ্যাডমিন, সে অনুমোদন দিলে -> অ্যাকাউন্টস, সে অনুমোদন দিলে -> যাবে ডেলিভারি বিভাগের কাছে। এবং এই প্রক্রিয়া আপনি তৈরি করতে পারবেন আপনার প্রতিষ্টানের মত করে, আর সব মোবাইলেই আপনি দেখতে পারবেন রিয়েল টাইম এবং এখানেই দেখে শেষে অনুমোদন দিয়ে দিলেই হলো। যখন ডিলার পণ্য পেয়ে যাবে, সে স্বীকৃতি জানাবে , সবাই এক সাথে দেখতে পেল। এই কাজগুলো যদি একটি ছোটো সফটওয়্যার দিয়ে খুব সহজেই করা যায়। তা হলে সময় সহ কাগজেরও কোনো প্রয়োজন হলো না। আর এটি হলো আামদের ক্লাউড অফিস।
এই সফটওয়্যারের পেছনে শক্ত সিকিউরিটি সিস্টেম রয়েছে বলেও জানান মান্না মাহমুদ। তিনি বলেন, এই ক্লাউড অফিস ডিজিটাল ওয়ার্ক প্লেসের সিকিউরিটি অনেক উন্নত । এখানে ফেইসবুক বা মেসেঞ্জার এর মত কেউ কারও প্রফাইল দেখতে পারবে না বা চাইলেই অ্যাড রিকুয়েষ্ট করতে পারবে না। ইউজার কেউ কাউকে দেখতে পারবে না, অনুমতি ছাড়া। অ্যাড করা যাবে যদি কেউ আপনার ইমেইল জানে । এটা বিজনেস সফটওয়্যার। একমাত্র মেইল জানালেই তাকে ইনভাইট পাঠিয়ে টিম করতে পারবেন। সব কিছুই এনক্রিপটেড। বলেও জানান মান্না।
আমরা যে প্রযুক্তির কথা বলছি, এগুলো নিকটতম ভবিষ্যত। কারণ এর পেছনে ফেসবুক, মাইক্রোসফট এর মত বড় বড় প্রতিষ্ঠান ইনভেস্ট শুরু করেছে। কীভাবে মোবিলিটি ম্যানেজ করে ইন্টারপ্রাইজগুলোকে সাহায্য করা যায়। ক্লাউড অফিস ২০১০ সাল থেকে শুরু করে দীর্ঘ নয় বছর ধরে গবেষনা ও ডেভেলপমেন্ট এর মাধ্যমে প্লাটফরমটি ব্যবহার যোগ্য করেছে যা বর্তমান বিশ্বে সতন্ত্র এবং অদ্বিতীয় ।