আগামী দিন হবে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ ও ট্যাবের কারণ আগামী দিন শিক্ষার। দেশে চার কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে, তাদের সবার প্রয়োজন হবে ল্যাপটপের বলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি আরো বলেন, এক সময় বাংলাদেশ প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকলেও এখন অনেক এগিয়ে। কারণ প্রযুক্তি নামের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম জড়িয়ে আছে। তার কারণেই আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং দেশে ৮.৫ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। এ ছাড়া যত ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়বে, তত ল্যাপটপ ট্যাবের চাহিদাও দিন দিন বাড়বে। কম্পিউটার, ল্যাপটপ বলতেই এক সময় সবাই বুঝতো বিশেষ কিছু। কারণ বিশেষ মানুষেরা এগুলো ব্যবহার করত। কিন্তু বর্তমানে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, ট্যাব হয়েছে সবার বন্ধু। কাজের জায়গা বিভিন্ন ডিভাইসের প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। বেড়েছে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ এবং ট্যাবের গুরুত্ব।
মন্ত্রী আরো বলেন, ল্যাপটপ মেলা শুধু কেনাবেচার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি এক্সপিরিয়েন্স জোন হিসাবেও ব্যবহার হয়। এই মেলার কারণে যে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কেননা আগে ল্যাপটপ বিক্রি তেমন ছিল না, এখন রুপান্তর ব্যাপকভাবে হয়েছে। আমাদের পরিধি বিস্তর হচ্ছে, বৈচিত্র্যতাও আসছে। মনিটর পিসি হতে পারে সে ধারনায় ছিল না। আর এখন দেশে বসেই সুপার কম্পিউটার নিয়ে আলোচনা হয়, যা এক সময় ¯^প্ন ছিল।
ল্যাপটপের এই মেলা অব্যাহত রাখতে হবে উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ল্যাপটপের বর্তমান চাহিদা বিবেচনা করলে এ দেশের বাজার এখন ডিভাইস প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর কাছে লোভনীয়। ইতিমধ্যে অনেক বিদেশী কোম্পানি দেশে ল্যাপটপ সংযোজনের চিন্তাভাবনা করছে। আর দেশের দুটি কোম্পানি ল্যাপটপ প্রস্তুতও করছে।
এর আগে আজ বিকেল ৪টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা উদ্বোধন করেন মাননীয় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এসার বাংলাদেশের চ্যানেল সেলস কানসালটেন্ট সাকিব হাসান, আসুস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মো. আল ফুয়াদ, ডেল বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আতিকুর রহমান, এইচপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ইমরুল হোসেইন ভূঁইয়া, লেনোভো বাংলাদেশের ম্যানেজার সেলস রাশেদ কবির, গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল ফাত্তাহ ও এক্সপো মেকারের কৌশলগত পরিকল্পনাকারী মুহম্মদ খান।
মুহম্মদ খান বলেন, আগের সব মেলাতে শিক্ষার্থী, তরুণ প্রজন্মসহ সবার অংশগ্রহণ ছিল প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। আশা করছি, এবারের মেলা আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। ল্যাপটপের পাশাপাশি মেলায় সর্বশেষ প্রযুক্তি ও ডিজাইনের ডিভাইস নিয়ে হাজির হয়েছে অংশগ্রহনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর সর্বশেষ মডেলের ল্যাপটপের পাশাপাশি আনুষাঙ্গিক যন্ত্রাংশও পাওয়া যাচ্ছে। সব ধরনের পণ্যেই পাওয়া যাচ্ছে বিশেষ ছাড় এবং সঙ্গে উপহার।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) শুরু হয়েছে তিনদিনের ‘এফোরটেক সামার ল্যাপটপ ফেয়ার ২০১৮’। এক্সপো মেকারের আয়োজনে এটি দেশের ২০তম ল্যাপটপ প্রদর্শনী। ল্যাপটপ ও ট্যাবলেট নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় এই প্রদর্শনী ও বিকিকিনির আয়োজনটি শনিবার পর্যন্ত চলবে। এ ছাড়া প্রতিদিন মেলা চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।
এবারের আয়োজনে ১টি টাইটেল স্পন্সর প্যাভিলিয়ন, ৫টি স্পন্সর প্যাভিলিয়ন, ১৪টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ২৭স্টলে দেশ বিদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তির পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক এফোরটেক। সহ-পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে এসার, আসুস, ডেল, এইচপি, লেনোভো। পার্টনার হিসেবে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম বিষয়ক বিশেষায়িত নিউজ পোর্টাল টেকশহরডটকম (techshohor.com) এবং এডুমেকার। এ ছাড়া মেলায় মিডিয়া বুথও রয়েছে।
মেলাতে বিশ্বখ্যাত কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এসার, আসুস, ডেল, এইচপি, লেনেভো ছাড়াও অংশ নিয়েছে আমেরিকান ব্র্যান্ড আইলাইফ। দেশীয় একমাত্র কম্পিউটার নির্মাতা ব্র্যান্ড ওয়ালটনও রয়েছে। পরিবেশক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অংশ নিয়েছে স্টার টেক, গ্লোবাল ব্র্যান্ড ও স্মার্ট টেকনোলজিস। মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বশেষ প্রযুক্তির পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির সঙ্গে মূল্যছাড় ও উপহার দিচ্ছে। রয়েছে স্ক্র্যাচ কার্ড, র্যাফেল ড্রতে উপহার জেতার সুযোগ।
এ ছাড়া প্রদর্শনীতে পাওয়া যাচ্ছে ট্যাবলেট কম্পিউটার, ইন্টারনেট সিকিউরিটি পণ্য ও ল্যাপটপের আনুষাঙ্গিক গ্যাজেট। বিশেষ ছাড়, উপহারের পাশাপাশি মেলায় বেশ কয়েকটি নতুন মডেলের ল্যাপটপের মোড়কও উন্মোচন করা হবে।
প্রতিবারের মতো এবারো মেলার অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে (facebook.com/laptopfair.bd) কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। কুইজে অংশ নিয়ে আকর্ষনীয় পুরস্কার জিতে নেবার সুযোগ রয়েছে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলায় প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। তবে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় কিংবা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবে। প্রতিবন্ধীরাও বিনামূল্যে প্রবেশের এই সুযোগ পাচ্ছে। প্রদর্শনীর সব আপডেট ও খবর মেলার অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ (facebook.com/laptopfair.bd) এবং টেকশহরডটকম (techshohor.com)-এ পাওয়া যাচ্ছে।