ব্রডব্যান্ডের সহযোগিতা ছাড়া অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা বা ভার্চুয়াল ক্লাস বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে মত দিয়েছেন মোবাইল খাতসংশ্লিষ্টরা। আর বিষয়টিকে গুরুত্ব নিয়েই সরকার অতি শিগগিরি প্রতিটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি লাস্টমাইল কানেক্টিভিটিতে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের (আইএসপিএবি) সাবসিডি দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মহসিনুল আলম।
শনিবার (৪ জুলাই) সিটিও ফোরাম আয়োজিত ‘টেলিকম সেবায় আইটি’র ভূমিকা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে এ তথ্য জানান তিনি। সিটিওফোরাম সভাপতি তপন কান্তি সরকারের সঞ্চালনায় এই অনলাইন সেমিনারে আরো অংশ নেন রবি আজিয়েটার সিআইও ড. আসিফ নাইমুর রশীদ, বাংলালিংক ডিজিটালের আইটি ডিরেক্টর সৈয়দ সোহেল রেজা এবং গ্রামীণফোনের হেড অব ডিজিটাল শাহরিয়ার ইবনে জামান।
সেমিনারের শুরুতেই মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবি আজিয়েটার ক্লাউড কম্পিউটিং কনসালট্যান্ট মোহাম্মাদ আসিফ। আইডিসি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি জানান, ডিজিটাল রূপান্তরের কারণে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের বাজার ৬৭ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১৬২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
রবি আজিয়েটার সিআইও ড. আসিফ নাইমুর রশীদ বলেন, যখন ই-লার্নিং এর পরিসর আরো বাড়বে, তখন শুধু মোবাইল পাইপের ওপর নির্ভর করলে তা মোটেও বিজ্ঞতার পরিচয় হবে না। এজন্য আমাদের একটি কনসোর্টিয়াম অংশীদারিত্বের দিকে যেতে হবে। মোবাইলের ব্যান্ডউইথ ফিক্সড ব্যান্ডউইথের দিকে অফ-লোড করতে হবে।”
তার সঙ্গে ঐক্যমত পোষণ করে গ্রামীণফোনের হেড অব ডিজিটাল শাহরিয়ার ইবনে জামান বলেন, প্রস্তুতি হিসেবে ভবিষ্যতের বিষয় মাথায় রেখে আমরা কাজ শুরু করেছি। মাইক্রোস সার্ভিস বেস আর্টিকেচারেও কাজ করছি। শিক্ষার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বাংলালিংক ডিজিটালের আইটি ডিরেক্টর সৈয়দ সোহেল রেজা বলেন, সবাই কিন্তু সব কনটেন্ট নিয়ে আছেন, প্রসেস কিন্তু রেডি না। সবাই হয়তো সিচ্যুয়েশনের সঙ্গে অ্যাডাপ্ট করেছেন। কিন্তু ভবিষ্যতে এই ইকো সিস্টেমে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
আলোচনায় অংশ নিয়ে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মহসিনুল আলম বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মূল রসদ উচ্চগতির ইন্টারনেট। কিন্তু দেশে এখনো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাড়ছে না। ভবিষ্যতে ডেটাই খনিজ তেলের ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আরো বলেন, সরকার প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে। ইতোমধ্যেই ৩৬০০ ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। বাকি যে ৭৭২টি ইউনিয়ন রয়েছে এগুলোর জন্যও কম্পিউটার কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বিটিআরসি এসওএফ ফান্ড থেকে কানেক্টেড বাংলাদেশ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। পপ সৃষ্টি হওয়ার পর লাইস্ট মাইল কানেক্টিভিটিতে আইএসপিরা যেন সংযোগ দিতে পারে সেজন্য সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। এজন্য সরকার কিছুটা হলেও একটা সাবসিডি দিয়ে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের সুযোগ প্রকল্পে রাখা হয়েছে।