প্রায় সাড়ে চার হাজার ধরনের এবং দুই লাখেরও বেশি পণ্য ও সেবা এখন পাওয়া যাচ্ছে ই-কমার্স সাইট ইভ্যালিতে। প্রায় দশ হাজার নিবন্ধিত ব্যবসায়ী এবং লক্ষাধিক ক্রেতাদের সাথে নিয়ে পণ্য ও সেবার পরিসর আরও বড় হচ্ছে মার্কেটপ্লেসটির।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে দেশিয় প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। নিজেদের কার্যক্রমের শুরু থেকেই শুধু পণ্য না বরং বিভিন্ন ধরনের সেবাকে একই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ইভ্যালি। মার্কেটপ্লেসটিতে বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে পাওয়া পণ্যগুলোর মধ্যে আছে ব্যাগ, জুতা, জুয়েলারী, পোষাক, ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স পণ্য, ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেটস, কসমেটিক্স, খাদ্যপণ্যসহ নানান ধরনের পণ্য। এছাড়াও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সিমেন্ট, ইলেকট্রিক্যাল ফিটিংস এবং হার্ডওয়্যার পণ্যের মত দ্রব্যের সমারোহও থাকছে ইভ্যালিতে।
বিভিন্ন ধরনের সেবা খাত বিশেষ গুরুত্বের সাথে জায়গা করে নিয়েছে ইভ্যালিতে। আর্থিক এবং ব্যাংকিং, বিউটি কেয়ার, ক্যাটারিং, ডে-কেয়ার, আইটি সেবা থেকে শুরু করে আইনী পরামর্শ, স্বাস্থ্য সেবা, ভ্রমণ ও ভিসা পরামর্শ এবং টিউশন সেবার মতো শতাধিক সেবা আছে প্ল্যাটফর্মটিতে।
প্রতিষ্ঠানটির দাবি, ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে প্রায় সবধরনের পণ্য ও সেবা ই-কমার্সের মাধ্যমে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াই ইভ্যালির লক্ষ্য। ব্যবসায়ী এবং গ্রাহকদের সেরা ই-কমার্স অভিজ্ঞতা উপহার দিতে ইভ্যালি বদ্ধপরিকর বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটির উর্ধ্বতন কর্তারা।
ইভ্যালির উদ্যোক্তা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের মটো হচ্ছে, ‘ট্রান্সফর্মিং লাইফ টু ডিজিটাল’। আমরা দেশের মানুষের জীবনযাত্রাকে ডিজিটাল করতে চাই। বিশেষ করে কেনাকাটার বিষয়ে তাদের যে ফিজিক্যাল (সরাসরি) অভিজ্ঞতা সেটিকে আমরা পুরোপুরি ভার্চুয়াল করতে চাই। আমরা যে শুধু গ্রাহক বাড়াতে চাই তা নয় বরং আমরা ব্যবসায়ীদের সংখ্যাও বাড়াতে চাই। আমরা চাই ট্রাডিশনাল ব্যবসায়ীরা আরও বেশি করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সাথে সম্পৃক্ত হোক। এই জায়গাটায় ইভ্যালি অবদান রাখতে চায়।
ইতিমধ্যে ক্রয়ের অধিক পরিমাণ ক্যাশ ভাউচার দিয়ে ই-কমার্স গ্রাহকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে ইভ্যালি। পণ্যের ডেলিভারি নিয়ে কিছু গ্রাহকের অভিযোগ থাকলেও সার্বিকভাবে ইভ্যালিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন প্ল্যাটফর্মটির ক্রেতারা। আমিন উদ্দীন অর্নব নামের ইভ্যালির এক গ্রাহক বলেন, আমি ২০০ শতাংশ ভাউচার অর্ডার করে একটি মোটরসাইকেল অর্ডার করেছিলাম ইভ্যালিতে। গত সপ্তাহের বুধবার বাইকটির ডেলিভারি পেয়েছি। যদিও আরও চার পাঁচদিন আগে পাওয়ার কথা ছিল বাইকটির। তবুও আমি সন্তুষ্ট। এমন দামি একটি পণ্য ই-কমার্স থেকে কেনা নিয়ে সংশয়ে ছিলাম। কিন্তু ইভ্যালির কারণে ই-কমার্সের ওপর আস্থা বাড়ছে।
এবিষয়ে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে গ্রাহক এবং মার্চেন্ট সবার জন্যই সেরা অভিজ্ঞতা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছি। ইভ্যালিতে এখন মাসে প্রায় ১৬ থেকে ২০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন হয়। প্রতিদিন এক হাজারের ওপর অর্ডার জমা পড়ে। তবে এটা ঠিক যে, কিছু জায়গায় আমরা কাংখিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারছি না। এর অন্যতম কারণ হল যে, ই-কমার্সের জন্য যে ধরনের ইকো-সিস্টেম দরকার তা আমাদের দেশে এখনো গড়ে ওঠেনি। আমরা সেবিষয়েও সচেতন আছি। আশা করছি আমাদের অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে সেই ইকো-সিস্টেমটিও গড়ে উঠবে। তখন সবার জন্যই দারুণ সব অভিজ্ঞতা উপহার দেবে ইভ্যালি।