তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে আবেগ কিংবা অভিব্যক্তি প্রকাশে ব্যক্তি, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সচেতনতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন কোন মহল যেন দেশের সুনাম ও মর্যাদা নষ্ট এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এজন্য আইসিটি বিভাগের অধীন ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী আজ আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারে বিসিসি মিলনায়তনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো গাইডলাইনস ও সাইবার সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি ২০২১-২০২৫ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন এবং বিশ্বে বাংলাদেশের সাইবার সিকিউরিটি র্যাং কিং বিষয়ে অবহিত করণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী দেশে গত চার বছরে হার্ডওয়্যার শিল্পখাতে সক্ষমতা অর্জন হয়েছে উল্লেখ করে বলেন করোনাকালীন গত ২০ মাসে সাইবার সিকিউরিটির জন্য প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বর্তমান বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
সাইবার নিরাপত্তায় জনশক্তির বৈশ্বিক চাহিদার তথ্যচিত্র উপস্থাপন করে তিনি বলেন বিশ্বে এখন সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে যা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে বিশ্বে ৩৫ লক্ষ সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টের প্রয়োজন। তিনি গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্টের চাহিদা মেটাতে দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা কোর্স, সার্টিফিকেট কোর্স ও ব্যাচেলর ডিগ্রী চালু করার জন্য ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ড কমিশনের প্রতি আহবান জানান। তিনি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবেও নিজেদের সক্ষমতা গড়ে তুলতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন।
সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে পলক বলেন, ব্যবহারকারী অজান্তেই ৭০ হাজার তথ্য সংগ্রহ করে ফেসবুক। কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই তথ্যগুলোর মধ্যে দুর্বল দিকগুলো ব্যবহার করে ব্যবসা করছে সোশ্যাল মিডিয়াটি। আয় করছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। পক্ষান্তরে এই দুর্বল ও মিথ্যা তথ্যগুলোর মাধ্যমে ২০১২ সালে রামুতে, ২০১৬ সালে নাসিম নগরে, ২০১৭ ঠাকুরপারা এবং ২০১৯ সালে ভোলায় এবং ২০২১ সালে এসে কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও রংপুরে প্রাণহানি ও সম্পদ বিনষ্ট করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে নিজেদের মূল্যবান, স্পর্শকাতর ও ব্যক্তিগত ডেটা প্রকাশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন ।
আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক খায়রুল আমীন।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো গাইডলাইনস ও সাইবার সিকিউরিটি স্ট্রাটেজি ২১-২৫ এর ওপর মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির পরিচালক (অপারেশন) এবং বিজিডি ই-গভসার্টের প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ।
পরে বাংলাদেশ সাইবার সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি ২০২১-২৫ মোড়ক উন্মোচন করা হয়।